খেলাধুলা

‘করোনাযোদ্ধা’ ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে অতিরিক্ত সচিবের কবিতা

দেশে করোনাভাইরাস আঘাত হানার পর সরকার যখন সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করে, তখন কর্মহীন হয়ে পড়ে অসংখ্য মানুষ। দিন আনে দিন খায়- এমন মানুষদের কষ্টের সীমা নেই। তাদের জন্যই আবার ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা করে সরকার।

সরকারী ত্রাণ ও ব্যক্তিগত সাহায্য বিতরণ করে সরকারের যে কয়জন মন্ত্রী-এমপি প্রশংসা কুড়িয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী।

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নানা পেশার মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপির সুনাম দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন তাকে ‘করোনাযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদ প্রদান করেছে। আমেরিকার জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব পিস কর্তৃক শান্তি প্রতিষ্ঠায় ২০২০-২১ এর জন্য ফেলো মনোনীত হয়েছেন তিনি।

করোনার সময় অসহায় মানুষের প্রতি ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর ভালোবাসা এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের সাহায্য করতে যাওয়া দেখে মুগ্ধ-অভিভূত তারই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ক্রীড়া)। নাম মো. আব্দুল করিম। সেই মুগ্ধতা থেকে প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে একটি কবিতাও রচনা করে ফেলেছেন তিনি।

‘করোনাযোদ্ধা’ মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, প্রতিমন্ত্রী যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়- এই শিরোনামে লেখা অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল করিমের কবিতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সাড়া পড়েছে। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরে। কবিতা লেখা প্রসঙ্গে জাগো নিউজের কাছে তিনি বলেন, ‘আমি যমুনা পাড়ের মানুষ। করোনার এই তিন মাসে স্যারের ছোটাছুটি দেখে আমি অভিভূত। করোনার সময়ে আমাদের স্যারের যে পারফরম্যান্স সেটা অন্য কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী কিংবা এমপির নাই- এটা আমার মনে হয়েছে।

তিনি নিজের জীবনকে হাতের তালুর মধ্যে নিয়ে অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আর যেদিন তিনি ‘করোনাযোদ্ধা’ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন, তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম স্যারকে নিয়ে একটা কবিতা লিখবো। আন্তরের সেই আকুতি থেকেই রোববার সকালে অফিসে এসেই কবিতা লিখলাম। এরপর মন্ত্রী মহোদয়ের পিএস-এর কম্পিউটার অপারেটরকে দিয়ে টাইপ করালাম।’

আপনার লেখা কবিতা তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচিত। যাকে বলে ভাইরাল। আপনি দেখেছেন সেটা? ‘আমি এখনো যন্ত্রপাতির সঙ্গে সেভাবে মানিয়ে উঠতে পারিনি (হাসি)। আমি ম্যানুয়াল লোক। ফেসবুক চালাই না। তাই জানিও না। আমার একটু আবেগ আর বিবেক আছে। এ দুটো মিলিয়ে কাজ করি ’-বলছিলেন সরকারের এই অতিরিক্ত সচিব।

সেই কবিতার লিংক

কবিতা : ‘করোনাযোদ্ধা’মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপিপ্রতিমন্ত্রী যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়

কখনো গেরিলা কায়দায়আড়ালে আবডালেকখনো গগণ বিদারীসম্মুখ সমরেতুমি যুদ্ধ করেছমানবতার ঢালে।

তুমি ছুটে বেড়িয়েছতোমার দৃষ্টিসীমারএ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তেমানবতার স্ফুলিঙ্গে।তুমি স্তব্ধ করেছক্ষুধার দাবানলনিমিষেইচোখের পলকেতোমার শাণিত সমরাস্ত্রমানবাধিকারের ঝান্ডা উড়িয়ে।তৃষ্ণার্ত মানবতার পাশেতুমি ঝরিয়েছঅমিয় সুধাপ্রশান্ত মহাসাগররূপে।আর্তমানবতার আহাজারীতেতুমি থাকনিনিথর, নিঃশ্চুপ।

তোমার সরব উপস্থিতিতেতারা খুঁজে পেয়েছেমাদার তেরেসার সেবা,বেঁচে থাকার আশা।

তুমিতো পাগলপ্রায় ছিলেডাক্তারের খোঁজে, সেবিকার অন্বেষণেতুমিতো অস্থির ছিলেঅ্যাম্বুলেন্স জোগাড়ে,সুরক্ষা সামগ্রী বিলিতেতুমিতো অবিচল ছিলেপিসিআর ল্যাব স্থাপনেতুমিতো দৃঢ়চিত্ত ছিলেরক্ত সংগ্রহ কর্মসূচীতে-যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে,করোনার কঠিন সংকটকালেকরোনাযুদ্ধের সামগ্রিক প্রস্তুতিতে।করোনাকালে তুমি ছিলেগরীব, দু:স্থ, কর্মহীন, অসহায়ের পাশেতুমি ছিলেকৃষক, শ্রমিক, মেহনতী জনতার কাছেতুমি ছিলেনিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, উচ্চ বিত্তসকলের সাথেতুমি ছিলেআবাল বৃদ্ধ বণিতাসকলের মাঝে।বলতোকোথায় ছিলে না তুমিকরোনাকালে?তুমিতো তখনও ছিলেতৃতীয় লিঙ্গ আর প্রতিবন্ধীদের তরে।গলির ধারের ছেলেটি, বস্তির টোকাইআর পথকলি,সেলুন কর্মচারী আর রেলস্টেশনের ছিন্নমুল মানুষশুধুই কি তাই, মসজিদের ঈমাম-মুয়াজ্জিনকাউকেই তো তুমি ভূলনিকরোনার সেই ক্রান্তিকালে।

করোনায় থমকে গেছেবিশ্ববাসীকিন্তু তোমাকে কি পেরেছে থামাতেকরোনা সর্বনাশী?

তুমি যুদ্ধের দামামা বাজিয়েচীনের প্রাচীরের মতসুরক্ষা ব্যুহ তৈরী করেচীনের উহান হতে ছড়িয়ে পড়াকরোনার বিরুদ্ধেজীবন বাজী রেখেকরোনার তান্ডবকে তলিয়ে দিয়েছআটলান্টিকের অতল গহ্বরে।

তুমি যুদ্ধ করেছ অসীমউদ্দীপ্ত মানবতায়জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চেতনায়জেনেও, নিজের জীবন বিপন্নপ্রায় বাঁচাতেখুৎপীড়িত, নিপীড়িত, উৎপীড়িত আর্তমানবতাকরোনার করাল গ্রাস ও থাবায়।

তোমার বীরত্ব গাঁথা আজদেশের গন্ডি পেরিয়েবিশ্ব অংগনে।তুমি আজ করোনাযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতআন্তর্জাতিক দরবারে।তোমাকে নিটোল অভিনন্দনগোটা বাংলার প্রতিটি মানুষেহৃদয়ের গহীন থেকে।

আরআই/আইএইচএস/