১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সোপান রচিত হয়েছে। অথচ এত বছর পরও সেই ভাষা আন্দোলনের শহীদ ও সৈনিকদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা রাষ্ট্র আজও প্রণয়ন করতে পারেনি বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। দ্রুত ভাষাশহীদ ও সৈনিকদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া এ আহ্বান জানান।
তারা বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস পড়তে গিয়ে আমরা শিশুকাল থেকেই জানি, ২১ ফেব্রুয়ারির মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন সালাম, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ আরও অনেকে। প্রশ্ন জাগে, সেই সংখ্যাটি আসলে কত? তখনকার পত্রিকা বা সরকারের কারো কাছেই কি এর কোনো হিসাব নাই? ‘অনেকে’ শব্দ নিয়ে অস্পষ্টতা তৈরি হয়। মোটামুটি কাছাকাছি একটা সংখ্যা হলেও ধারণা হতো জাতির।’
ন্যাপ নেতারা বলেন, ‘মহান ভাষা আন্দোলনের এত সময় পরও শহীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হয়নি। প্রকাশিত তথ্য অনুসারে ১৯৫২ সালের ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারি বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে বহু লোক নিহত হলেও তারা সবাই স্বীকৃতিও পাননি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ভাষাশহীদ আসলে কতজন, এই তথ্য চিরকাল অজানা থেকে যাবে যদি সরকার সংরক্ষিত তথ্যাদি প্রকাশ না করে।’
তারা বলেন, ‘আমাদের চিন্তা, বিবেক ও ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। আমাদের এই মৌলিক অধিকার যে বীরসন্তানদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাদের রাষ্ট্রীয় সম্মান, সম্মানী ও সম্মাননা দেয়া আমাদের পরম দায়িত্ব ও কর্তব্য।’
তারা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের এত সময় পরও ভাষাশহীদ ও ভাষাসৈনিকদের তালিকা প্রণয়ন না হওয়া এবং তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ক্ষেপন দুঃখজনক। সকলের মনে রাখা প্রয়োজন, আমরা জাতীয় বীরদের যথাযথ সম্মান জানাতে ব্যর্থ হলে ইতিহাস আমাদের কাউকে ক্ষমা করবে না। এই ব্যর্থতার কারণে শাসকদের ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে একদিন।’
কেএইচ/এমএইচআর/এমকেএইচ