দেশজুড়ে

চেয়ারম্যান হওয়া হলো না গোপালগঞ্জের সেই সিঙ্গাড়া বিক্রেতার

আগামী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়া হলো না গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার কুশলী ইউনিয়নের সিঙ্গাড়া বিক্রেতা মো. মজনু মোল্লার।

রোববার (১১ জুলাই) রাত ৩টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর।

এর আগে রাত ৮টার দিকে অসুস্থতা বোধ করায় তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

মজনু মোল্লা নিলফা গ্রামের মৃত মো. রুস্তম মোল্লার ছেলে।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. পারভেজ রুমী বলেন, ‘প্রায় ৩০ বছর ধরে সিঙ্গাড়া বিক্রি করে মজনু মোল্লা মানুষের সেবা করে আসছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। প্রচারণাও শুরু করেছিলেন। আজ তিনি চলে গেলেন। তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’

প্রতিবেশী তৈয়ব মেম্বার বলেন, ‘মজনু মানুষের দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে পারতেন না। তিনি তাদের জন্য নির্বাচনে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন।’

সোমবার (১২ জুলাই) বাদ জোহর নিলফার ধোপার মাঠে জানাজা শেষে তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

উল্লেখ্য, গত ২২ জুন ‘গোপালগঞ্জের সিঙ্গাড়া ফেরিওয়ালা মজনু এবার চেয়ারম্যান প্রার্থী’ শিরোনামে জাগো নিউজে একটি সংবাদ প্রচারিত হয়।

সেখানে মজনু মোল্লা বলেছিলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। সারা জীবনে অনেক না খেয়ে থেকেছি। আমি চেয়ারম্যান হলে গরিবের মাল বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেব। কোনো লুটপাট-দুর্নীতি করবো না। এছাড়া চেয়ারম্যানের কাজ করার পাশাপাশি আমি সিঙ্গাড়া বিক্রি করে যাব।’

বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা হ্যান্ডমাইক দিয়ে গানের সুরে গেয়ে প্রচার করে বাইসাইকেল চালিয়ে তিনি সিঙ্গাড়া বিক্রি করতেন। সরকারের দেয়া সুযোগ-সুবিধা তিনি গরিব মানুষের হাতে তুলে দেয়ার জন্যই প্রার্থী হওয়ার আশা ব্যক্ত করেছিলেন।

জানা যায়, মজনু মোল্লা ১৯৯২ সাল থেকে টুঙ্গিপাড়ার পথে পথে ফেরি করে সিঙ্গাড়া বিক্রি করতেন। ৯ম শ্রেণিতে পড়ার সময় অর্থাভাবে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকেই সিঙ্গাড়া বিক্রি শুরু করেন।

মেহেদী হাসান/এসএমএম/জিকেএস