জাগোনিউজ২৪.কম-এ সচিত্র সংবাদ প্রকাশের পর বরিশালের হিজলা উপজেলায় শহীদদের তালিকায় জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামাঙ্কিত স্মৃতিফলক অপসারণ করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পদাধিকার বলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রশাসক বকুল চন্দ্র কবিরাজ গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের পত্তনী ভাঙ্গার জোনা মার্কেট সংলগ্ন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নবনির্মিত জাদুঘর এলাকায় যান। পরে তার নির্দেশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা স্মৃতিফলকটি অপসারণ করেন। এসময় পত্তনী ভাঙ্গার বাসিন্দা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হারুন অর রশিদ, স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. দুলাল, হুমায়ুন নলী ও মো. ইমরানসহ অর্ধশতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্মৃতিফলক অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও বকুল চন্দ্র কবিরাজ জাগো নিউজকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করেছেন এবং যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাতে বাঙালি জাতি তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। তাদের এ ত্যাগের অপরিসীম মহিমাকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্মৃতি জাদুঘর নির্মিত হচ্ছে। সেখানে ভুলবশত শহীদদের তালিকায় জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামাঙ্কিত স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছিল। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে বিষয়টি জানতে পারি। আজ সকালে জেলা প্রশাসক স্যার ফোন দিয়ে স্মৃতিফলকটি অপসারণের নির্দেশ দেন। বিকেলে স্মৃতিফলকটি অপসারণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্মৃতিফলকে নামাঙ্কিত করার সময় যারাই এ কাজটি করেছেন, তাদের আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল। এ ধরনের ভুল কাম্য নয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, শহীদ স্মৃতিফলকে জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম! শিরোনামে জাগো নিউজে প্রকাশিত সংবাদটি আমার চোখে পড়ে। সকালে ফোন কল করে ইউএনও বকুল চন্দ্র কবিরাজকে শহীদদের তালিকায় জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামাঙ্কিত স্মৃতিফলকটি অপসারণে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশের মঙ্গল চেয়ে মৃত্যুকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। যাদের মহান ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা, তাদের নামের তালিকা নিয়ে এ ধরনের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের পত্তনী ভাঙ্গার জোনা মার্কেট এলাকায় জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। দুই সপ্তাহ আগে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের নামের তালিকায় জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামাঙ্কিত স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। এতে অনেকে ভোগান্তির শিকার হন। মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজন ও পরিচিত ব্যক্তিরা পরিবারের লোকজনকে ফোন দিচ্ছেন।
অনেকে সমবেদনা জানিয়ে আত্মার মাগফেরাত কামনা করছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতিফলকটি অপসারণের জানিয়ে আসছিলেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার শহীদ স্মৃতিফলকে জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম! শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে জাগো নিউজ।
সাইফ আমীন/এসআর