খেলাধুলা

‘আমার সঙ্গে যা হয়েছে, ভালো হয়নি’

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে জাতীয় দলে সবচেয়ে কম সময় নিজেকে মেলা ধরা ব্যাটারের নাম এনামুল হক বিজয়। ক্যারিয়ারের প্রথম ২০ ওয়ানডেতে তিন-তিনটি সেঞ্চুরি আছে বিজয়ের, যা নেই তামিম, সাকিব, মুশফিক কিংবা রিয়াদের মতো সব সময়ের সফলতম উইলোবাজদের কারোরই।

এবং সে সেঞ্চুরিগুলো আইসিসির কোন সহযোগী সদস্য দেশের বিপক্ষে নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর খুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৪৫ বলে ১২০ ও ২০১৪ সালের ২০ আগস্ট সেন্ট জর্জে ১৩৮ বলে ১০৯) আর পাকিস্তানের মতো বড় দলের বিপক্ষে (২০১৪ সালের ৪ মার্চ শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ১৩২ বলে ১০০)।

কিন্তু এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার দীর্ঘ হয়নি বিজয়ের। ২০১৫ বিশ্বকাপের সময়ই ইনজুরির কারণে বাদ পড়েন। তিন বছর পর জাতীয় দলে ডাক এলেও জায়গা মজবুত করা সম্ভব হয়নি। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কামব্যাক করলেও টিকে থাকতে পারেননি। ৮ ম্যাচ পর ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই শ্রীলঙ্কার মাটিতে শেষবার জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন তিনি। এরপর প্রায় তিন বছর জাতীয় দলের বাইরে বিজয়।

কিন্তু কুষ্টিয়ার ২৯ বছরের এ উদ্যমী ও প্রাণখোলা স্বভাবের বিজয় হাল ছাড়েননি। এখনো স্বপ্ন দেখেন জাতীয় দলে ফেরার। আবার জাতীয় দলে ফিরতে উন্মুখ হয়ে রয়েছেন এই ওপেনার। তার ধ্যান, জ্ঞান ও স্বপ্ন- সবই জাতীয় দলকে ঘিরে। জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখাই শুধু নয়, সাধ্যমত চেষ্টাও করে যাচ্ছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে মোটামুটি ভাল পারফরমারের তালিকার উপরের দিকেই রয়েছে তার নাম।

এবারও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দারুন উজ্জ্বল বিজয়। ব্যাট হাসছে। নিয়মিত রান করছেন। টপ স্কোরারদের তালিকায় খুব ওপরের দিকেই তার নাম। সমান দুটি করে সেঞ্চুরি এবং হাফ সেঞ্চুরিতে (৬০, ১২৭, ৫৩ , ৩৩. ১৮৪ আর ১৫) ৪৭২ রান। জাতীয় দলের বাইরে থেকেও নিজেকে কিভাবে তৈরি রাখেন বিজয়?

উল্কার বেগে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সূচনা, এরপরও জাতীয় দলে জায়গা পাকাপোক্ত হয়নি। সুযোগও পেয়েছেন তূলনামুলক কম। তা নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে কি না? এসব নিয়ে জাগো নিউজের সাথে একান্ত আলাপে অনেক খোলমেলা কথাই বলেছেন বিজয়।

শোনা যাক বিজয়ের সে সব কথা-বার্তা

জাগো নিউজ: আপনার কি মনে হয়, আপনি কোন অন্যায়ের শিকার? কিংবা আপনার মেধা, প্রজ্ঞা আর পারফরমেন্সের সত্যিকার মূল্যায়ন হয়নি? জাতীয় দলের হয়ে ফর্ম ভাল থাকার পরও আপনি বাদ পড়েছেন, ফেরার সুযোগও পাননি তেমন। এসব নিয়ে কোন আক্ষেপ, অনুশোচনা কিংবা হতাশা আছে মনে?

বিজয়: আমি ভেঙ্গে বলতে চাই না। কাউকে দোষারোপও করবো না। তবে আমার সাথে যেটা হয়েছে, যাই হয়েছে, সেটা ভাল হয়নি। কেউ যদি আমার ক্ষতি করে থাকেন, সেটা ভাল কাজ হয়নি। আমার মনে হয় দেশ ও ক্রিকেট বোর্ড আমার জন্য ইনভেস্ট করেছে।

অনেক ছোট বেলা থেকেই ক্রিকেট বোর্ড আমাকে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলের হয়ে সুযোগ দিয়েছে। আমাকে যুব দলে (অনূর্ধ্ব-১৯) দলের হয়ে বিশ্বকাপে খেলিয়েছে। আমাকে ‘এ’ দলে নিয়েছে আর জাতীয় দলে খেলার সুযোগ করে দিয়েছে। আমার জন্য বোর্ডের কত ইনভেস্ট আছে! আমারও দায়িত্ব ও কর্তব্য ছিল সে ইনভেস্টের প্রতিদান দেয়া; কিন্তু আমি সে সুযোগ পেলাম কই!

জাতীয় দলে খেলতে না পারলে আমি কিভাবে রিটার্ন দেব? তাই আমিও চাই দেশকে আবার প্রতিনিধিত্ব করতে। আমার পারফরমেন্স দিয়ে দেশকে ভাল জায়গায় নিয়ে যেতে। অবশ্যই আমার মনে হয়, আমার ক্ষেত্রে যা হয়েছে, তা ভাল হয়নি। আরও বেটার হতে পারতো। যদি কেউ উল্টাপাল্টা কিছু বলেও থাকেন, সেটা দেশের জন্য আর আমার জন্য ভাল হয়নি। আমি মনে করি দেশের ক্রিকেটের জন্যও তা মঙ্গলজনক হয়নি।

জাগো নিউজ: ৬ ম্যাচে সমান দুটি করে সেঞ্চুরি, হাফ সেঞ্চুরি সহ পাঁচশোর কাছাকাছি (৪৭২) রান। আপনার দল প্রাইম ব্যাংকও লিগ টেবিলে সবার ওপরে। সময়টা কেমন কাটছে?

বিজয়: জী, আলহামদুল্লিল্লাহ। টিম হিসেবে তো খুব ভাল যাচ্ছে। সবাই বেশ আছে। সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসে রাজা আর মিঠুন ভাই যোগ হলো। তাতে আরও ভাল হয়েছে। আমরা সবাই খুশি। নাসিরও রান করছে। সব মিলিয়ে ভাল কাটছে।

জাগো নিউজ: সবার কথা জানা ও শোনা হলো। এবার আসা যাক বিজয়ের প্রসঙ্গে। বিজয়ের নিজের সময়টা কেমন যাচ্ছে?

বিজয়: আসলে আমি সস্বপ্নটা বড়ই দেখি। তাই ছোটখাট কথা-বার্তা, নেতিবাচক আচরণ এসব আর মাথায় আসে না। সব সময় চিন্তা করি, যেখানেই খেলি যাতে আমার পারফরমেন্সটা সবাই পছন্দ করে। বলতে পারেন, পারফরমেন্সের আলোকে দেখতে গেলে যেন আমার নামটা সবার আগে আসে। টিমের কথা উঠলেই যেন আমার নাম চলে আসে। সবাই একবাক্যে যেন বলে ওঠেন, আরে ওই দলের বিজয় তো দারুণ খেলছে। এভাবে পারফর্ম করার চেষ্টা করি।

জাগো নিউজ: এই যে জাতীয় দলে না থেকেও ভেতরে বড় স্বপ্ন দেখা এবং মানসিক, শারীরিক অন্য স্কিলের দিক থেকে নিজেকে শতভাগ আপ টু দ্য মার্ক রাখার অনুপ্রেরণাটা পান কিভাবে?

বিজয়: ওই যে বললাম, আমি যেহেতু একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করি, তাই আমার নিজেকে তৈরি রাখার অনুপ্রেরণাটাও একান্তই আমার নিজে থেকেই আসে। এছাড়া সব সময়ই নিজেকে আপডেট রাখতে এবং উন্নতি করতে চেষ্টা করি। আমার শেখার আগ্রহ প্রবল। যখনই যাকে পাই, তার কাছ থেকে কিছু নেয়া, কিছু শেখার চেষ্টা থাকে। কোনো বিদেশি কোচ বা বিদেশি প্লেয়ার যেই আসুন, চেষ্টা করি তার কাছ থেকে কিছু শিখতে। নিজেকে সমৃদ্ধ করতে। শতভাগ নেয়ার চেষ্টা থাকে। বলতে পারেন লার্নিং কার্ভেই থাকি।

জাগো নিউজ: জাতীয় দলে খেলার কথা ভাবেন না? আবার জাতীয় দলে ফিরতে ইচ্ছে করে না?

বিজয়: হ্যাঁ, অবশ্যই করে। আর তাই চেষ্টা করি নিজেকে সব সময় প্রস্তুত রাখতে। কারণ, আমার জাতীয় দলে ফেরার এবং খেলার অনেক বড় স্বপ্ন। সাধ ও ইচ্ছে। আমি সব সময়ই ভাবি আবার কবে জাতীয় দলে খেলবো।

এবং আশা করি কত তাড়াতাড়ি জাতীয় দলে ফেরা যায়। তাই নিজেকে এমনভাবে তৈরি রাখার চেষ্টা আছে যখন যে ফরম্যাটে ডাক আসে, যদি সুযোগ পাই, তাহলে সে ফরম্যাটেই যেন নিজেকে মেলে ধরতে পারি। পারফর্ম করতে পারি।

জাগো নিউজ: জাতীয় দল নিয়ে আপনার প্রত্যাশাটা আসলে কী? শুধু ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করে আবার ফেরা?

বিজয়: জাতীয় দল নিয়ে আমার চিন্তা, স্বপ্ন আর আশা অনেক বড়। আমি আসলে জাতীয় দলে শুধু ফিরতেই চাই না। জাতীয় দলে সুযোগ পেলে অনেক বড় কিছু করতে চাই। সব সময় চেষ্টা করি ফিটনেস লেভেল আর পারফরমেন্সটাকে হাই করে রাখা যায়। তাতে বড় লেভেলে পারফরম করা একটু হলেও সহজ হয়।

জাগো নিউজ: বগুড়ায় বাংলাদেশ টাইগারের অনুশীলন ক্যাম্পটা কেমন ছিল?

বিজয়: ওই প্র্যাকটিসটা খুবই ভাল ছিল। রুটিন ওয়ার্ক বলতে যা বোঝায়, তাই হয়েছে। একটা সিস্টেমের ভিতরে থেকে রুটিন মেনে প্র্যাকটিস হয়েছে।

বাবুল স্যার খুব কষ্ট করছেন সে ক্যাম্পে। সাথে আফতাব ভাই, তালহা ভাই নাজমুল ভাইসহ কয়েকজন ইয়াং কোচ আছেন, যারা জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এখনো প্লেয়ার তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন। আবার আমাদের নিয়ে কাজও করলেন। তাদের দারুণ জায়গা ছিল। তাদের ধন্যবাদ। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তারা পরিশ্রম করেছেন। সে অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।

আমরা সব সময় যে রুটিনটা ফলো করি, ফিটনেস লেভেল ঠিক রাখা, মেন্টালি ফ্রি থাকা আর নিয়মিত প্র্যাকটিস করা- সেই রুটিন মাফিক অনুশীলনটা হয়েছে। আমার মনে হয় সেই প্র্যাকটিস সেশনগুলি কাজে দিয়েছে। এটা কন্টিনিউ করতে পারলে মনে হয় প্লেয়ারদের জন্য একটা ভাল প্লাটফর্ম তৈরি হবে। নিজেকে তৈরির কাজে সুবিধা হবে।

জাগো নিউজ: জাতীয় দলের বাইরের ক্রিকেটারদের জন্য এমন প্লাটফর্ম কতটা দরকার?

বিজয়: এটাতো সব দেশেই আছে। আমাদের দেশেও শুরু হলো। দেখেন এমন একটা প্লাটফর্ম অবশ্যই জরুরি। দেখেন জাতীয় দলে অনেক প্লেয়ারেরই অভিষেক হচ্ছে। অনেকেই খেলছে। আপনি যদি সে সংখ্যাকে ১০০ ধরেন, তাহলে সেখান থেকে হয়তো এখন ৫-৬ জন সু-প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সে হিসেব থেকেই আমি বলছি, জাতীয় দলে যাদের ডেব্যু করাবেন সেখান থেকে তো আর ১০০টা সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম হবে না।

তার মানে, এর মধ্যে বাকিরা হয়তো ওঠা-নামার মধ্য দিয়েই যাবে। কখনো ভাল করবে আবার কখনো খারাপ হবে। অনেক ভাল পারফরমার বের হবে, আবার হবেও না। এর মধ্য দিয়েই যাবে। চলতে থাকবে। আমার মনে হয়, সে সব ক্রিকেটারদের ছুঁড়ে ফেলে না দিয়ে তাদের পূণর্বাসনই বলুন বা পরিচর্য্যার ক্ষেত্রই বলুন- কিছু একটা থাকা উচিৎ।

জাগো নিউজ: বাংলাদেশ টাইগার্স কিভাবে জাতীয় দলের বাইরের ক্রিকেটারদের পূণর্বাসন ও পরিচর্য্যায় কার্যকর অবদান রাখতে পারে, একটু ভেঙ্গে বলবেন?

বিজয়: হ্যাঁ, আমি মনে করি এমন একটা প্লাটফর্ম অবশ্যই জাতীয় দলের বাইরের ক্রিকেটারদের সঠিক ও যথাযথ পরিচর্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

জাগো নিউজ: সেটা কিভাবে?

বিজয়: সেটা হলো যারা অভিষেকের পর কোন না কোন কারণে জাতীয় দলের বাইরে, তাদের যেন সঠিক পরিচর্য্যার কাজটা করে দিতে পারি। সেটা এখন হচ্ছে। হ্যাঁ, বলতে দ্বিধা নেই এ প্রক্রিয়া বা প্লাটফর্ম যত আগে তৈরি হবে তত আমাদের প্লেয়ার প্রডিউসড বাড়বে।

এখন হয়ত ১০০‘র মধ্যে ৫ থেকে ৬ জন তৈরি হচ্ছে। তখন সেটা ২০ থেকে ২৫ জনে গিয়ে দাঁড়াবে। এটাকে কন্টিনিউই করতে পারলে খুব ভাল হবে। আমি সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন স্যার, এনাম স্যার (কাজী এনাম) সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ দেই। এমন একটি সুন্দর ও কার্যকর মঞ্চ তৈরির জন্য। এটা আরও আগে হলে আরও ভাল হতো। দেরিতে হলেও যেটা হয়েছে সেটাও অনেক ভাল এবং আমার বিশ্বাস বাংলাদেশ টাইগার্স-এর কার্যক্রম বহাল থাকলে আগামীতে সুফল মিলবে।

জাগো নিউজ: আসলে বিজয়ের ভবিষ্যত লক্ষ্য কী?

বিজয়: টার্গেট আসলে শুধুই জাতীয় দলে আবার ফেরা না। লক্ষ্য বা স্বপ্ন যাই বলেন না কেন- সেটা অনেক বড়। বাংলাদেশ দলের হয়ে যারা আইকনিক ফিগার, বিশেষ করে যে ৫ জন বাংলাদেশ টিমকে লং টাইম সার্ভিস দিয়ে প্রায় অমর হয়ে আছেন, তাদের মত হবার এবং সে রকম দীর্ঘ সময় জাতীয় দলকে সার্ভিস দেয়ার স্বপ্ন দেখি। চিন্তা করে ভাবি, উনাদের মত ১০-১৫ বছর বাংলাদেশকে একটানা ভাল মত সার্ভিস দিব।

আর সেটাও জানি ওই সার্ভিস দিতে গেলে নিজেকে একদম তৈরি রাখতে হবে। সব সময় কক্ষপথে থাকতে হবে। যাতে ডাক আসলে নিজেকে মেলে ধরতে পারি। আমার লেভেলটা যাতে কখনই নিচে না নামে। আমি যাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে নেমে বিপাকে না পড়ি। আমার লেভেলটা যাতে ঠিক থাকে। সে চিন্তা করেই ঘরোয়া ক্রিকেটে সব আসরে ভাল খেলতে এবং নিজেকে শতভাগ তৈরি রেখে মাঠে নামার চেষ্টা করি। আমার মন থেকে চাই, যতটা সম্ভব ভাল খেলতে। লক্ষ্যটা এমন রাখি যে, ধরেন, আমি যদি এ বছর ৫০০ করি, সেটাকে যেন ৬০০‘তে নিয়ে যেতে পারি।

জাগো নিউজ: বাংলাদেশ টাইগার্স এর কার্যক্রম শুরু হলো এই সেদিন। আর আপনি জাতীয় দলের বাইরে বেশ কয়েক বছর। এত দীর্ঘ সময় জাতীয় দলে না থেকে নিজেকে তৈরি রাখাতো অনেক কঠিন। সেটা কিভাবে মেইনটেইন করছেন?

বিজয়: আসলে আমাদের ওইরকম প্র্যাকটিস ফ্যাসিলিটিজ কমই পাওয়া গেছে। শুধু আমি না, যারা গত দেড় দুই বছর ভাল খেলেছে, তারা কেউই সেভাবে ভালভাবে নিজেদের মেইনটেইন করা, যথাযথ পরিচর্য্যার এবং ভাল ট্রেনিং ফ্যাসিলিটিজ পায়নি।

আমি একা না। নাঈম ভাই (নাঈম ইসলাম), জাকির হাসানসহ আরও অনেকেও ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেলেছে; কিন্তু উন্নত প্রশিক্ষণ বলুন আর নিজেকে সেভাবে তৈরি করার অনুকুল প্রেক্ষাপট ও পরিবেশ মেলেনি তেমন। ছিলও না। তারপরও আমার মনে হয় তারা সবাই নিজ উদ্যোগ ও গরজে নিজেকে তৈরি করেছে। মেন্টালি অনেক ফিট থাকার চেষ্টা করেছে।

আর ফিজিক্যাল ফিটনেস ধরে রাখার জন্য যথাযথ জিমওয়ার্ক জরুরি। সবার পক্ষে সেটাও সম্ভব হয়নি। তবে এখন কেউ কেউ নিজেকে তৈরি রাখার জন্য পেশাদার ট্রেনার রেখে ফিজিক্যাল ফিটনেস ধরে রাখার কাজ করছেন। করে যাচ্ছেন। মিরপুরে বোর্ডের জিমে যেতে না পারলেও নিজেরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে করছে। আবার সুইমিংপুলে গিয়ে সাঁতার কাটার কাজও করে যাচ্ছে কেউ কেউ।

জাগো নিউজ: কিন্তু ব্যাটিং নিয়ে কাজটা করলেন কার সাথে? নিজের ব্যাটিং স্কিল উন্নত করার কাজটা কিভাবে সারলেন?

বিজয়: অবশ্যই বাংলাদেশ টাইগার্সের ১০ দিনের ক্যাম্পে আমার ব্যাটিং নিয়ে কাজ করেছি। সেটা উপকারে এসেছে। এর আগে আমি বেশ কিছুদিন সালাউদ্দীন স্যারের (কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীন) সাথে কাজ করেছি। সালাউদ্দীন স্যার আমাকে অনেক সময় দিয়েছেন। বেশ হেল্পও করেছেন।

এছাড়া বিপিএলে আমার টিম সিলেটের বিদেশি ব্যাটিং কোচ হয়ে আসা জুলিয়ান উড (পাওয়ার হিটিং কোচ) এর সাথে কাজ করায় আমার প্র্যাকটিসের প্যাটার্ন পাল্টে গেছে। যেটা আমি রুটিনের মত করার চেষ্টা করছি। আমার মনে হয় খুব ইম্পরটেন্ট হলো সবার কাছ থেকে যখন যেটা পাওয়া যায়, সেটা নেয়ার চেষ্টাই করেছি।

জাগো নিউজ: বিজয়ের আপাততঃ লক্ষ্য কী?

বিজয়: লিগটা ভালমত শেষ করা। যে টেম্পুতে আছি সেটা ধরে রেখে পারফরম করা। যে টেম্পরামেন্ট এ আছি, যে প্রসেস মেনে আগাচ্ছি এবং যেভাবে খেলছি, পুরো লিগ যেন সেটা করতে পারি। আর মূল লক্ষ্য হলো আমার টিম প্রাইম ব্যাংককে চ্যাম্পিয়ন দেখতে চাই।

এটা শেষে সব সময় মাথায় আছে জাতীয় দলে কবে ব্যাক করবো? আমার পছন্দর ফরম্যাট টেস্ট ক্রিকেট, ওয়ানডে তারপর টি-টোয়েন্টি। আমার ফাস্টক্লাসের রেকর্ডও আল্লাহর রহমতে ভাল।

বি.দ্র: সাক্ষাৎকারটি শুক্রবার (১ এপ্রিল, ২০২২) নেয়া। আজ (শনিবার, ২ এপ্রিল) মোহামেডানের বিপক্ষে ৯৪ রানের ইনিংস খেলেছে বিজয়।

এআরবি/ আইএইচএস/