দেশজুড়ে

নদীর জলে ভাসলো বিজু ফুল

ভোরের আলো উঁকি দিতেই ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে দলবেঁধে ছুটছেন চাকমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে নানা বয়সী মানুষ। বর্ণিল সাজে মায়ের হাত ধরে ফুল হাতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসছে শিশুরাও। সবার গন্তব্য খাগড়াছড়ির চেঙ্গী, মাইনী আর ফেনী নদী।

করোনার থাবা কাটিয়ে মঙ্গল কামনায় গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে নদীতে হরেক রকমের ফুল ভাসাবে সবাই। পিছিয়ে ছিল না অন্য সম্প্রদায়ের দর্শনার্থীরাও। তারাও এসেছিল বন্ধুদের সঙ্গে ফুল বিজু উপভোগ করতে।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সকালে পানিতে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির চেঙ্গী, মাইনী ও ফেনী নদীর পানিতে ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় সামাজিক অনুষ্ঠান বৈসাবি। গেলো দুই বছরের মহামারি করোনার বাধা কাটিয়ে চিরচেনা রূপ ফিরে পেয়েছে উৎসবটি।

ফুল ভাসাতে আসা তরুণী শুভ্রা দেওয়ান বলেন, ‘পুরোনো বছরের সব গ্লানি ধুয়ে মুছে সবাই যেন শান্তিতে থাকে—এ প্রত্যাশায় জলে ফুল ভাসাতে এসেছি। আমরা দীর্ঘকাল ধরে ফুল ভাসিয়ে আসছি। ফুল বিজুর মধ্য দিয়েই আমাদের মূল বিজু উৎসবের শুরু হয়।’

ফুল বিজু মূলত চাকমা সম্প্রদায়ের উৎসব হলেও সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধনে এ উৎসব সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে গেলো দুই বছর অনেকটা ম্লান ছিল পাহাড়ের বৈসাবি উৎসব। অনেকটা ঘরোয়াভাবেই পালন করা হয়েছে এ উৎসব।

চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজন তিন ভাগে ভাগ করে বিজু উৎসব পালন করেন। চৈত্র মাসের ২৯ তারিখে ‘ফুল বিজু’, ৩০ তারিখে ‘মূল বিজু’ এবং বৈশাখের প্রথম দিনে ‘গজ্যা পজ্যা’ বিজু পালন করা হয়।

বৈসাবি উৎসবের দ্বিতীয় দিনে ১৩ এপ্রিল ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর হারি বৈসু উৎসব পালিত হবে। এদিন ঘরে ঘরে রান্না হবে বিশেষ পাঁচন। মন্দিরে মন্দিরে চলবে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান।

বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন ১৪ এপ্রিল পালিত হবে মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব। মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন মেতে উঠবেন জলকেলি উৎসবে।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসআর/এএসএম