অনলাইনে তার প্রচুর ভক্ত, একেকটি ভিডিওতে রয়েছে লাখ লাখ ভিউ। অথচ রাস্তায় নামলে কেউ তাকে চেনে না। যেখানে ইচ্ছা নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ান, নেই কোনো খ্যাতির বিড়ম্বনা। বলছি পাকিস্তানের জনপ্রিয় নারী র্যাপার ইভা বি’র কথা। হিজাব-নিকাবে মুখ ঢেকে গান করেন তিনি। ফলে কণ্ঠ পরিচিত হলেও অনুসারীদের কাছে তার চেহারা অজানা।
২২ বছরের এ তরুণী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, এটা মজার যে, লোকজন আমাকে চিনতে পারে না। তারা আমার গান বাজায়, কিন্তু আমি যখন সামনে থাকি তখন তারা জানে না যে এটাই আমি।
ইভা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের র্যাপশিল্পী এমিনেম ও কুইন লতিফাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একসময় বেডরুমের দেওয়ালে গানের কথা লিখে রাখতে শুরু করেন তিনি। পরে সেগুলো ফেসবুকে শেয়ার করতেন। এভাবে বেশ কিছু অনুসারী জুটে যায় তার।
পরিবার রাগ করতে পারে ভেবে পড়াশোনার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে লুকিয়ে স্টুডিওতে যেতেন করাচিতে জন্ম নেওয়া এ তরুণী। সেখানে অন্য উদীয়মান শিল্পীদের সহযোগিতায় গানের কথাগুলো রেকর্ড করতেন।
কিন্তু এ কথা একসময় ইভার ভাইয়ের কানে পৌঁছে যায়। এরপর প্রচণ্ড তোপের মুখে পড়তে হয় তাকে। পরিবারের ধারণা ছিল, এ ধরনের সঙ্গীত মেয়েদের জন্য বেমানান এবং এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে পাকিস্তানের মতো রক্ষণশীল দেশে বিয়ে করতে সমস্যায় পড়তে হবে ইভাকে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার জেদের কাছে হার মানেন পরিবারের সদস্যরা। এখন ইভার মা নিজেই মেয়েকে সব কিছুতে সাহায্য করেন। হাসতে হাসতে পাকিস্তানি এ তরুণী বলেন, তারা বুঝেছিল, আমাকে থামানো যাবে না।
সম্প্রতি কোক স্টুডিও পাকিস্তানের আয়োজনে একটি গানে অংশ নেওয়ার পর থেকে ইভা বি’র নাম ঝড়ের গতিতে ছড়াতে থাকে। ‘কানা ইয়ারি’ নামে মিউজিক ভিডিওটিতে মুখ ঢাকা অবস্থাতেই র্যাপ করতে দেখা গেছে তাকে। ইউটিউবে এখন পর্যন্ত গানটি দেখেছেন ১৭ লাখের বেশি মানুষ।
তবে গানটির অন্য শিল্পীদের মতো তারকাখ্যাতি গায়ে মাখেননি ইভা। তার কথায়, একসঙ্গে দুটি জীবন যাপন করা বেশ অদ্ভুত। মানুষ আমাকে চেনে, আবার সত্যিই চেনে না।
কখনো কোনো ক্যাফে, রেস্টুরেন্ট অথবা বিয়েবাড়িতে কেউ যখন ‘কানা ইয়ারি’র প্রশংসা করে, তা বেশ উপভোগ করেন ইভা। কারণ তারা জানে না, এর শিল্পী তাদের পাশেই রয়েছে।
কখনো কখনো হয়তো দু-একজন চোখ দেখে চিনে ফেলেন, তবুও নিজের পরিচয় স্বীকার করেন না ইভা। তার কথায়, আমি যেমন আছি, তেমনই ভালো।
সূত্র: ডন
কেএএ/এএসএম