‘সকালে বাংলাবাজার ঘাটে এসেছি। ঘাটে প্রবেশ করতেই দেখি পুলিশের সিগন্যাল। তিন নম্বর ফেরিঘাটের পাশের টার্মিনালে প্রবেশ করতে হলো। সেখানে গাড়ির সামনে ৩০ থেকে ৩২টি প্রাইভেটকার। ঘাটে দায়িত্ব পালন করা আনসাররা জানান সিরিয়ালে ফেরিতে উঠতে দেওয়া হবে। কিন্তু কোনো সিরিয়াল ছিল না। যে যার মতো করে যেভাবে পারছে পুলিশ ম্যানেজ করে গাড়ি নিয়ে তিন নম্বর ঘাটে চলে যাচ্ছেন।’
‘একটার পর একটা ফেরি আসছে আর চলে যাচ্ছে। সিরিয়ালে যেখানে ছিলাম, সেই জায়গাই পড়ে থাকলাম। সকাল গড়িয়ে বিকেল ৪টা বাজলো। এ সময় বাংলাবাজারের তিন নম্বর ঘাট থেকে ফেরি ছেড়ে গেলো প্রায় থেকে সাত-আটবার। কিন্তু আমার গাড়ি (প্রাইভেটকার) যেখানে ছিল, সেখানেই থেকে গেলাম। কোনো ফেরিতেই যেতে পারলাম না।’
ফেরিতে উঠতে না পেরে এভাবেই ভোগান্তির কথা বলছিলেন নড়াইল থেকে আসা যাত্রী সাবিনা আক্তার। শুধু সাবিনা নন, ঘাটে আটকে আছেন আরও প্রায় তিন শতাধিক প্রাইভেটকারের যাত্রী। যতই সময় গড়িয়ে বিকেল বা সন্ধ্যা হচ্ছে, যাত্রীদের ভোগান্তি ততই বাড়ছে। টার্মিনালে সিরিয়ালে থাকা কয়েকশ গাড়ির চালক ও যাত্রীরা ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায়।
বাংলাবাজার ঘাটে আটকা পড়া যাত্রী সুমন আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যাদের গাড়ি ফেরিতে ওঠার ব্যাপারে কোনো তদবির নেই, একমাত্র তারাই ঘাট এলাকায় টার্মিনালে পড়ে থাকছেন।
ঈদুল ফিতরের ষষ্ঠ দিনেও রোববার (৮ মে) সকাল থেকে বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাবাজার ঘাটে কর্মস্থলমুখী যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় বাড়ছে।
ঘাটে যাত্রী নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে রাখতে দেখা গেছে। শিমুলিয়া থেকে খালি লঞ্চ-ফেরি-স্পিডবোট এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। মাত্র ছয়টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। পারাপারের অপেক্ষায় তিন শতাধিক যানবাহন। অন্যদিকে ঘাট পার হতে মোটরসাইকেলের দীর্ঘ লাইন পড়েছে সকাল থেকেই।
শিবচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমির হোসেন সেরিনিয়াবাদ বলেন, প্রত্যেকটি গাড়ির সিরিয়াল মেইনটেন করে ফেরি পারাপার করানো হচ্ছে। তবে ফেরি পারের জন্য প্রচুর তদবির শুনতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পুলিশের কিছুই করার নেই। বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, চাপ অনেকটাই কমে গেছে। গত দুদিনের মতো ঘাটে যানবাহন নেই। তবে যাত্রী আর পরিবহনের কথা চিন্তা করে দুপুরের পর থেকে ঘাটে ডাম্ব ফেরি ‘রায়পুরা’ যোগ করা হয়েছে। আশা করছি রাতের মধ্যেই ঘাটে আটকা পড়া অন্য যানবাহন পার করতে সক্ষম হবো।
একে এম নাসিরুল হক/এসআর/জিকেএস