দেশজুড়ে

মেহেরপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ, শয্যা সংকটে বারান্দা-মেঝেতে চিকিৎসা

মেহেরপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। বিশেষ করে গত এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ধারণক্ষমতা থেকে কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় হাসপাতালের মেঝে, বারান্দা ও করিডরে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্র বলছে, গত এক সপ্তাহে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৫৪২ জন রোগী। শনিবার (২৮ মে) ভর্তি হয়েছেন ৭৮ জন রোগী। আর ছাড়পত্র নিয়েছেন ৮২ জন।

এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে ওয়ার্ডে নার্সের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। পুরো তিনতলা ওয়ার্ডে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় অনেকের ঠাঁই হয়েছে বারান্দায়। এক কথায়, গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের।

হাসপাতালের নার্স চন্দনা খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এত রোগী সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এমন রোগীর চাপ আগে কখনো দেখিনি। প্রতিনিয়তই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।’

শয্যা সংকটে হাসপাতালের বারান্দায় ঠাঁই হয়েছে রোগী মো. রাফিউলের। তিনি শহরের স্টেডিয়াম পাড়ার বাসিন্দা। রাফিউল জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুক্রবার রাত থেকে পাতলা পায়খানা শুরু হয়। বাড়িতে স্যালাইন এবং ওষুধ খেয়ে সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করেছি। এতেও সুস্থ না হওয়ায় সকালে এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। শয্যা না থাকায় কোনোরকমে বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি।’

বড়বাজারের বাসিন্দা সাত্তার হোসেন বলেন, ‘শনিবার সকালে ভর্তি হয়েছি। ভর্তি হওয়ার দুদিন আগেও আমিসহ বাড়ির বেশ কয়েকজন সদস্য ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হই। অন্যরা বাড়িতে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হলেও আমার অবস্থার উন্নতি হয়নি। বাধ্য হয়ে শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। হাসপাতাল থেকেই বেশিরভাগ ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।’

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মকলেচুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ১০টি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ডরমিটরিতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আইসিডিডিআরবি (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এতে কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে, যা পানি অথবা খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। তবে কোন এলাকার পানি বা খাবারে এ জীবাণু রয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রোগীদের বেশিরভাগই শহরের বাসিন্দা।’

আসিফ ইকবাল/এসআর/জিকেএস