ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভের এই টেস্টটা ইতিহাসের পাতায় আলাদা করে ঠাঁই করে নিল। শুধুমাত্র একজন মানুষের জন্য। তিনি ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। অভিষেকের পর থেকে বিরতিহীনভাবে খেলেই চলেছেন। কোন ছেদ নেই, কোন যতি নেই। বিরতিহীনভাবে চলতে চলতে ম্যাককালাম খেলে ফেললেন শততম টেস্ট। ওয়েলিংটনে আজ (শুক্রবার) সকালে যখন স্টিভেন স্মিথের সাথে টস করতে নামলেন ম্যাককালাম, তখনই ইতিহাসে আরও একটি পাতা যুক্ত হয়ে গেলো। নতুন ইতিহাস তৈরী করে ফেললেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক। ১৩৫-৩৬ বছরের ইতিহাসে আর কোন ব্যাটসম্যান পারেননি এই কীর্তি গড়তে। টানা টেস্ট খেলার রেকর্ডটা আরও দীর্ঘ। অ্যালান বোর্ডার কিংবা এখনও খেলে যাওয়া অ্যালিস্টার কুকের কথা বললে, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম তাদের ধারে-কাছেও নেই। কিন্তু একটি জায়গায় তো নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক ছাড়িয়ে গিয়েছেন সবাইকে। বোর্ডার ১৫৩ টেস্ট টানা খেলতে পারেন। কিংবা অ্যালিস্টার কুক এখনও টানা ১২৪ টেস্ট খেলে যেতে পারছেন; কিন্তু ম্যাককালাম যে অভিষেকের পর থেকেই টানা শততম টেস্ট খেলে ফেললেন! এই কীর্তিটা তো বোর্ডার-কুকরা করতে পারেননি। ইতিহাসটার মালিক সবার আগে হতে পারতেন দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্সই। গত বছর বাংলাদেশ সফরে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজটা যদি খেলতেন প্রোটিয়া এই ব্যাটসম্যান, তাহলে তিনিই হয়ে যেতেন প্রথম টানা শততম টেস্ট খেলা ক্রিকেটার। কিন্তু অনাগত সন্তানের জন্য স্ত্রীকে সময় দিতে টেস্ট সিরিজ না খেলেই দেশে ফেরত গিয়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। সুতরাং, টানা ৯৮টা টেস্ট খেলার পরই বিরতি দিয়ে দিতে হলো বর্তমান প্রোটিয়া অধিনায়ককে।এরই ফাঁকে সুযোগটা পেয়ে গেলেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। গত ডিসেম্বরেই শ্রীলংকার বিপক্ষেই খেলে টানা সর্বোচ্চ ৯৯টা টেস্ট খেলার রেকর্ড গড়েন ম্যাককালাম। এরপর শততম টেস্টের অপেক্ষায় থাকেন এই কিউই ব্যাটসম্যান। যদিও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই সিরিজ শেষ হলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে গুডবাই জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন তিনি। তবে, তার আগেই বিরল এবং অনন্য রেকর্ডটি গড়ে ফেললেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক।২০০৪ সালে হ্যামিল্টনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। ওই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫৭ রান করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন ১৯ রানে। টেস্ট ড্র হয়েছিল। এরপর থেকে বিরতিহীনভাবে টানা খেলে গেলেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত, ১০০টি টেস্ট। এর মধ্যে ৩৮.২৫ গড়ে তিনি রান করেছেন ৬২৭৩। সেঞ্চুরি ১১টি। সর্বোচ্চ রান ৩০২। হাফ সেঞ্চুরি ৩১টি। এর মধ্যে ওয়ানডে খেলেছেন ২৬০টি। ৩০.৪১ গড়ে রান করেছেন ৬০৮৩। সেঞ্চুরি ৫টি, হাফ সেঞ্চুরি ৩২টি। সর্বোচ্চ রান ১৬৬।আইএইচএস/পিআর