দেশজুড়ে

চুয়াডাঙ্গায় বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ

পৌষের পর মাঘেও চুয়াডাঙ্গায় কনকনে ঠান্ডা বিরাজ করছে। তাপমাত্রা ওঠা-নামা করলেও কমছে না শীত। টানা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর এবার শুরু হয়েছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। তবে সূর্যের দেখা মেলায় কিছুটা কমেছে কুয়াশার দাপট। কিন্তু কমেনি শীতের তীব্রতা। হিম শীতল বাতাসে শীতের তীব্রতা জানান দিচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না মানুষ।

আরও পড়ুন: যে কারণে চুয়াডাঙ্গায় বেশি শীত

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। দিনের বেলায় সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ মিলছে না। এতে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। আরও কয়েকদিন এমন পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। শুক্রবার এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এর আগে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত ছিল। এখন তাপমাত্রা কমে তা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে।

এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। ডায়রিয়া নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মেঝ ও বারান্দায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতলের শিশু ওয়ার্ডে ১৫ শয্যার বিপরীতে ৬১ শিশু ভর্তি রয়েছে। আর ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি আছে ৩১ জন। বাড়তি রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তার ও হাসপাতালের কর্মচারীদের।

আরও পড়ুন: ১৭ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ, অব্যাহত থাকতে পারে

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, শীতজনিত কারণে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাড়তি রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই শীতে নিউমোনিয়া রোগসহ ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এই তীব্র শীতে একটু সর্তকতা অবলম্বন করলেই শিশুদের কিছুটা হলেও নিরাপদ রাখা সম্ভব।

চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, শীত জনিত কারণে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জেলা সদর হাসপাতালসহ তিনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। আমরা স্বাস্থ্যসেবা জন্য সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি।

আরও পড়ুন: একদিন বিরতি দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় চলছে শৈত্যপ্রবাহ

অন্যদিকে, তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষরা। সকালে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা। শীতে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। তীব্র ঠাণ্ডায় দেখা দিচ্ছে নানা রোগ। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে আয় কমেছে শ্রমজীবী মানুষের। প্রকৃতির এমন বৈরি আচরণে কষ্ট ও দুর্ভোগ বেড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। ভোর থেকে কাজের সন্ধানে অপেক্ষা করেও মিলছে না কাজ। ফিরে যেতে হচ্ছে বাড়িতে। সরকারি সাহায্যর অপেক্ষায় আছেন তারা।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান জাগো নিউজকে বলেন, সরকারিভাবে পাওয়া সহযোগীতা এবং শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। শীতার্ত মানুষের পাশে প্রশাসন আছে। এছাড়া আমি এ জেলার বিত্তবানদেরসহ বিভিন্ন সংগঠনকে অসহায় শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছি। এমনকি আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে আমার সাধ্যমতো তাদের পাশে থাকছি।

জেএস/জিকেএস