সিলেটে ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০-৪৫ টাকা। এখন তা ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে লাল মুরগির দাম বেড়েছে ৫০ টাকা। ফলে সাড়ে চারশ টাকার লাল মুরগি এখন ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নগরের রিকাবীবাজার, বন্দরবাজার, আম্বরখানা, সুবিদবাজার, মদীনা মার্কেট এবং মেডিকেল রোডসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে শাক-সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও দাম তুলনামূলক বেশি। সবজির খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু ২৫ টাকা, কাঁচামরিচ ১৪০-১৫০, ধনেপাতা ১৩০, টমেটো ৩০, শিম ৪০, ঢেঁড়শ ৭০, করলা ৪০, বাঁধাকপি ২০, ফুলকপি কেজি ২৫, গাজর ৪০-৫০, বরবটি ৪০, চিচিঙ্গা ৪০, ঝিঙা ৫০, বেগুন ৪০-৫০ ও পেঁপে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব শাকে কেজিতে দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা।
নগরীর অন্যতম রিকাবীবাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। শাক-সবজি থেকে শুরু করে কোনো পণ্যের দাম কমতে শুনছি না। শুধু বাড়ছেই। কিন্তু আমাদের বেতন-ভাতা এক টাকাও বাড়েনি। ফলে বাজারে এলে আমাদের রীতিমতো ঘাম ঝরে। এ অবস্থা থেকে কবে যে মুক্তি মিলবে তা আল্লাহই ভালো জানেন।
তিনি আরও বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে চায়না আদা পাওয়া যাচ্ছে না। চয়না রসুনের দামও কেজিতে বেড়েছে ২০-২৫ টাকা। ভরা মৌসুমেও বাড়ছে শাক-সবজির দাম। গত সপ্তাহে এক কেজি কাঁচামরিচ ১২০ টাকায় কিনলেও আজ সেই মরিচের দাম বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। এ অবস্থায় সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, চায়না আদার বদলে দেশি আদা বিক্রি করতে হচ্ছে। এ সুযোগে আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ২০-২৫ টাকা। প্রতি কেজি চায়না রসুন সপ্তাহের ব্যবধানে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে শুধু রসুনের দামই কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। কিন্তু পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে খুচরা বাজারে কিছু করার থাকে না।
নগরের বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে জানা যায়, প্রতি কেজি এলসির পেঁয়াজ ৪০ ও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-২৫ টাকায়। মসুর ডাল (ছোট) কেজি ১০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বড় দানার মসুর ডালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতি হালি লাল মুরগির ডিম গত সপ্তাহে ৪৬ টাকায় বিক্রি হলেও আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়।
নগরীর বাগবাড়ি কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে আসা সরকারি চাকরিজীবী নিলুফা ইয়াসমিন জাগো নিউজকে বলেন, বাজার মৌসুমি শাক-সবজিতে ভরপুর হলেও দামে স্বস্তি নেই। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো শাক-সবজির দাম বাড়াচ্ছেন। কিন্তু প্রতি সপ্তাহ বা মাসে তো আমাদের আয় বাড়েনি। বাজার করা এখন অসম্ভব। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কড়া নজরদারি দরকার।
তবে সবজি বিক্রেতা রহম আলী জানান, শাকসবজির দাম বাড়ানোর সঙ্গে খুচরা ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই। পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে বাধ্য হয়েই দাম বাড়াতে হয়।
তিনি বলেন, শীত মৌসুম শেষ হতে চলেছে। আগামী সপ্তাহ থেকে কিছু কিছু সবজির দাম আরও বাড়বে। গত সপ্তাহেও শিমের বিচি ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ সেটি বিক্রি করতে হচ্ছে ১৪০ টাকায়। একই অবস্থা কাঁচামরিচের ক্ষেত্রেও।
ছামির মাহমুদ/এএইচ/এমএস