এশিয়া কাপের ১৩তম আসরের ফাইনালে বাংলাদেশ ও ভারত। এ ম্যাচ নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা। ক্রিকেট পাড়ায় শোরগোল পরে গেছে কে হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন? এশিয়া কাপের সবচেয়ে সফল দল ভারত নাকি নতুন উদীয়মান শক্তি বাংলাদেশ। এ নিয়ে শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন ভারতীয় দলের প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রী। জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য সম্পূর্ণ তুলে ধরা হলোঃপ্রশ্নঃ এবারের আসরে অন্যতম কঠিন প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ এবং তারা এখন ফাইনালে, নিজেদের প্রথম ম্যাচে তাদের বিপক্ষে সহজ জয়ই পেয়েছেন আপনারা। এবার কি হতে পারে, তাদের নিয়ে কি ভাবছেন?রবিঃ সেটা ভাল একটা ম্যাচ ছিল। আপনারা যদি দেখেন বাংলাদেশ টুর্নামেন্টের শুরুটা ভাল একটি জয় দিয়ে করতে পারতো। প্রথম খেলায় আমরা চাপে ছিলাম এবং শেষ ১০ ওভারে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু সব ম্যাচই কঠিণ। শেষ পর্যন্ত আপনি কি করলেন এবং ব্যাটিং-বোলিং বিভাগে আপনি কিভাবে সামঞ্জস্য রক্ষা করলেন তার ওপর এটা নির্ভর করে। আর আমি মনে করি আমরা দারুন কাজ দেখিয়েছি। কিন্তু প্রথম খেলাটা কঠিন ছিল।প্রশ্নঃ বাংলাদেশের স্টেডিয়ামে বিপুল দর্শক উপস্থিত থাকে, এটা কোন পার্থক্য তৈরি করবে কি? রবিঃ আমরা এসব হৈচৈ এর মধ্যে অভ্যস্ত। হোকনা শতভাগ এতকিছু বিবেচনা করলে কি চলে? যখন আপনি এমন পর্যায়ে খেলবেন তখন এসব প্রভাব ফেলেনা। নিজেদের সুবিধাগুলোরও পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করতে হয়। আপনি আরও উজ্জীবিত হবেন এবং দেখাবেন আপনি ভাল খেলতে পারেন।প্রশ্নঃ পিচগুলো এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি পিচের মতো না। আপনি কি মনে করেন ফাইনালের পিচ আরও ভাল হওয়া উচিত যাতে বিগ হিটাররা ভাল ব্যাটিংয়ের প্রদর্শণী করতে পারে?রবিঃ পিচে আমাদের হস্তক্ষেপ নেই। আমাকে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বলা হয়েছিল যে সবুজে ঢাকা কিছু একটা পেতে যাচ্ছেন। এরকমটাই হয়েছে। সুতরাং আগামীকাল যেমন উইকেটই থাকুক আমরা খেলার জন্য প্রস্তুত। আমাদের জন্য যে কন্ডিশনই থাকবে আমাদের কাজ হচ্ছে খেলতে নামা। কারণ সবারই বুঝতে হবে যে এখানে একটি দলই খেলছে না, উভয় দলকেই এ ময়দানে খেলতে হবে। সুতরাং এটা পরিচ্ছন্ন একটা খেলাই।প্রশ্নঃ ভারতীয়রা ভয়হীন ক্রিকেট খেলছে। আপনি কি পেছনে ফিরে বলবেন কিভাবে এই রূপান্তরটা হলো?রবিঃ আমার এখানে দশ ঘন্টা বসে থাকতে হবে যদি আমি সবটাই আপনাদের বলতে চাই। সেখান থেকে এখন আমরা এক নম্বর টি২০ দল। এটা একটা পর্যায়ক্রমিক পদ্ধতির অংশ, কিন্তু অবশ্যই উপভোগ্য। আশা করছি আমরা আগামীকাল (আজ) ফাইনালেও সেই ধরণের ক্রিকেট দেখাতে পারব।প্রশ্নঃ তাসকিন আহমেদের হাত দিয়ে এমএস ধোনির মাথা ধরে রাখার ছবি...রবিঃ আমি সবগুলো পত্রিকা পড়িনা। আপনারা পড়েন। আমরা ক্রিকেট খেলতে নামব। ম্যাচ চলার সময় আমার এত পড়ার অভ্যাস নাই। আপনারা পড়েন এবং আপনারাই নিজেদের মতো করে বিশ্লেষণ করেন। আমাদের কাজ হচ্ছে ক্রিকেট খেলার জন্য নেমে পড়া।প্রশ্নঃ বাংলাদেশের দুই/তিনজন ক্রিকেটার বেরিয়ে এসেছে এবং তাদের বেশ ভালই মনে হচ্ছে, তাদের নিয়ে কোন আলাদা পরিকল্পনা করেছেন?রবিঃ একক কোন খেলোয়াড়কে আলাদা করাটা আমার পছন্দ না। যখন দল ভাল করছে তখন চলুন ভারতীয় দল নিয়েই কথা বলি। সেটাই বেশি জরুরী। এটা কোন ব্যক্তির খেলা নয়। এটা দলগত খেলা যারা সমন্বিতভাবেই খেলতে নামে।প্রশ্নঃ কিছু বল এবং কয়েকটি হিট সবকিছুর পরিবর্তন আনতে পারে এবং এবার ফাইনাল। দল কিভাবে বিষয়টি দেখছে, জানাবেন?রবিঃ আমরা অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ে পূর্ণ। আপনারা এটাকে শুধু আরেকটি খেলা হিসেবেই দেখুন। কেন এটাকে ফাইনাল হিসেবে দেখা হচ্ছে? সবারই মনোভাব এমন থাকতে হবে যে মনোভাবটা টুর্নামেন্টের অন্য খেলার ক্ষেত্রে ছিল। আমাদের জন্য সবগুলো খেলাই নকআউট। আমরা এটাকে সে মনোভাব নিয়েই দেখছি। আমরা ভিন্ন কোনভাবে আগামীকালের (আজ) খেলাটিকে দেখব না।প্রশ্নঃ পাকিস্তান প্রায় শেষই হয়ে গেছে। আপনি কি মনে করেন উপমহাদেশে ভারত-বাংলাদেশ ক্রমেই বড় ধরণের লড়াইয়ের দিকে যাচ্ছে?রবিঃ আমি মনে করি উপমহাদেশের সবগুলো দলই খুব ভাল। সবারই কিছু উত্থান থাকে এবং পতনও থাকে। গত বছর শ্রীলঙ্কা এখানে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ছিল। বাংলাদেশও খুব ভাল ক্রিকেট খেলছে। খুব বেশিদিন হয়নি পাকিস্তান শীর্ষ দুইয়ে ছিল। এখন সেটা ভারত। আপনি কখনও উপমহাদেশের কোন দলকে হিসেবের বাইরে রাখতে পারবেন না। কিছু পর্যায় আসে যখন একটি দল শীর্ষে চলে যায় এবং আরেকটি দল শেষ হয়ে যায়। পরে হয়তো আবারও উপরে উঠে আসবেন। এটা সব দলের ক্ষেত্রেই ঘটে।আরটি/এমআর/আরআইপি