মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার চূড়ান্ত রায় আজ। আপিলটি দৈনন্দিন কার্যতালিকার ১ নম্বরে রাখা হয়েছে।বুধবার সকাল ৯টার পর মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করবেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করে দেয় আপিল বিভাগ। এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, আপিলে মীর কাসেমের চরম দণ্ড বহাল থাকবে। তিনি বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই আদালত বিচারকাজ করে থাকেন। কোনো মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ বা আইনজীবীর বক্তব্য বিচারকাজে প্রভাব পড়ে না। মীর কাসেমের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আদালত মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে মীর কাসেম আলীর বিষয়ে আগামীকাল যে রায় দেবেন, একজন আইনজীবী হিসেবে তা আমি মেনে নেব। তিনি বলেন, আইনজীবী হিসেবে কোনো অপরাধ ও অপরাধীকে আমরা সমর্থন করি না। তবে আদালতে যেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়, সে জন্য আইনজীবী হিসেবে আমরা আদালতকে সাহায্য করি। একজন আসামি যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হন, সে জন্য তাকে আমরা আইনি সহায়তা দিয়ে থাকি। সর্বোচ্চ আদালত ন্যায়বিচার করবেন বলেই আমি আশা করছি। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আলবদর কমান্ডার ও জামায়াতের শুরা সদস্য মীর কাসেম আলীকে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেয় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। রাষ্ট্রপক্ষের আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেলে মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ছয়জন (১১ নম্বর অভিযোগ) এবং একাত্তরের শেষদিকে একই স্থানে নির্যাতনের পর রঞ্জিত দাস ও টুন্টু সেনকে হত্যার অভিযোগ (১২ নম্বর) দু`টি প্রমাণিত হওয়ায় মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ১১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধকালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরদিন মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে আটক করে আলবদর সদস্যরা। ২৮ নভেম্বর মীর কাসেমের নির্দেশে আলবদররা তাঁকে দিনভর নির্যাতন করে। নির্মম অত্যাচারে জসিম মারা যান। পরে নিহত আরও পাঁচজনের সঙ্গে জসিমের মরদেহ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ১২ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, একাত্তর সালের নভেম্বরের কোনো একদিন হাজারী লেনের বাসা থেকে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, রঞ্জিত দাস ও টুন্টু সেনকে আটক করে মীর কাসেমের নেতৃত্বাধীন আলবদর সদস্যরা। ওই সময় হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ হাজারী লেনের ২৫০ থেকে ৩০০ ঘরে আগুন দেওয়া হয়। পরে জাহাঙ্গীর আলমকে আলবদররা ছেড়ে দিলেও রঞ্জিত ও টুন্টুকে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতন ও পরে হত্যা করা হয়।এফএইচ/জেএইচ/পিআর