আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ফটিকছড়িতে তৃণমূল ভোটে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য যে ভোট হওয়ার কথা দুই ইউনিয়নে তা হচ্ছে না। জাফতনগর ইউনিয়ন কমিটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে এবং ভূজপুর ইউনিয়নে ২৪ বছর পর গত মঙ্গলবার ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলন হওয়ার কারণে সেখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে না পারায় এ দুই ইউনিয়নে তৃণমূল ভোট হচ্ছে না। এদিকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কমিটি সংশ্লিষ্টদের ১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে, তৃণমূল ভোট করে একক প্রার্থীর তালিকা পাঠাতে। সংশ্লিষ্ট দলীয় সূত্র জানায়, জাফতনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার প্রায় ১৭ মাস পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়নি। এর মূলে রয়েছে সভাপতি মো. জিন্নাত আলী ও সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম উদ্দিনের দ্বন্দ্ব। জিন্নাত আলী সাবেক চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন নাজুর অনুসারী এবং সেলিম উদ্দিন বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল হালিমের অনুসারী। ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে তৃণমূল ভোটের জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে সম্প্রতি সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক দু’জনে পৃথক দু’টি কমিটি উপজেলা কমিটির বর্ধিত সভায় উপস্থাপন করেন। দুই কমিটির বিরুদ্ধেই তাৎক্ষণিক লিখিত আপত্তি দেন দলীয় প্রতীক নির্বাচনের প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. জাহাঙ্গীর আলম। পরে দু’জনের উপস্থাপিত কমিটি থেকে সমন্বয় করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা কমিটি একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে। এ কমিটিতে জিন্নাতপন্থিকে সভাপতি করা হয়েছে- এমন অভিযোগ তুলে কমিটির বিরুদ্ধে আপত্তি জানান সেলিম। এ নিয়ে দুই চেয়ারম্যান ও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। দ্বন্দ্ব নিরসনে উপজেলা কমিটি ও জেলা কমিটির নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করেও সমাধান দিতে পারেননি। এখানে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী পদে সাবেক চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন নাজু, বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল হালিম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে ১৯৯২ সালে ভূজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার পর আর কোনো সম্মেলন হয়নি। গত মঙ্গলবার সেখানে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়। এতে ইব্রাহীম তালুকদার সভাপতি ও আবদুল মান্নান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেও ৬৫ জনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হয়নি। এ ইউনিয়নে নবনির্বাচিত সভাপতি ইব্রাহীম তালুকদারসহ ছয়জন একক প্রার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম সোলায়মান সাংবাদিকদের বলেন, জাফতনগর ইউনিয়নে কমিটি সংক্রন্ত দ্বন্দ্ব ও ভূজপুরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় সেখানে তৃণমূল ভোট করতে পারছি না। তাই সেখানে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের সকলের নামের তালিকা এবং ১৩ ইউনিয়নে তৃণমূল ভোটে নির্বাচিতদের নামের তালিকা আমরা জেলা কমিটির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা কমিটির মাধ্যমে যাদের নৌকা প্রতীক দেয়ার চিঠি দেবেন, তারা নৌকা প্রতীক পাবেন। বাকিরা মনোনয়নপত্র জমা দিলেও তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তির ব্যবস্থা হবে।এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী বলেন, ১০ মার্চ রাত ১২টার আগে জেলা থেকে কেন্দ্রে প্রার্থীদের নামের তালিকা পৌঁছে যাবে। তাই জাফতনগর ইউনিয়নে ১২ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূলের ভোটগ্রহণ করে তালিকা পাঠানোর আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সুরাহা না হলে দলীয় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। জীবন মুছা/এনএফ/পিআর