খেলাধুলা

বাংলাদেশই উঠবে মূল পর্বে

অনেকেই বলে ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। কথাটা হয়তো ঠিক। নিজে খেলতে গিয়েও বিষয়টা অনেকবার টের পেয়েছি; কিন্তু কিছু হিসাব-নিকাশ যে একেবারে কাজ করে না, তা তো নয়। আমরা কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে যেদিন হারিয়েছিলাম, অনেকেই অঘটন বলেছিল; কিন্তু বিশ্বাস ছিল, বিশ্বের যেকোনো দলকে হারানোর সামর্থ্য আমাদের আছে। তাই বলে তখন তো আর বলে-কয়ে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডকে হারাতে পারতাম না।তখনকার অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশের সঙ্গে এখনবার বাংলাদেশ আর ওমানের তুলনা করলেও চলবে না। কারণ, ওমান দলটি পুরোপুরি অ্যামেচারদের দল। অধিকাংশই অভিবাসী। ভারত কিংবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। নিয়মিত ক্রিকেট খুবই কম হয়। ঘরোয়া ক্রিকেট শক্তিশালী নয়। দলের গভীরতা কম।অথচ বাংলাদেশ ক্রিকেট কতদূর এগিয়ে গেছে। গভীরতা বিশাল। সবাই প্রতিষ্ঠিত, পেশাদার ক্রিকেটার। ঘরোয়া ক্রিকেটে কঠিন লড়াইয়ের পরই তাদের মিলছে জাতীয় দলে খেলার টিকিট। তারওপর, বাংলাদেশ দলটি গত দেড়-দুই বছর টানা জয়ের মধ্যে রয়েছে। জয়ের অভ্যাস, পরের কোনো ম্যাচ জয়ের অর্ধেক কাজ আগে থেকেই সম্পন্ন করে রাখে। কারণ, তখন ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাসও থাকে অনেক উঁচুতে।ওমান দলটি হয়তো নিজেদের প্রথম ম্যাচেই আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছে। ওটা ছিল একটি অঘটন। আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটাররা হয়তো বুঝে উঠতে পারেনি। তার ওপর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই হয়তো তাদের জন্য কাল হয়েছে। যে কারণে শেষ দিকে এসে বেশ কিছু নো বল দিয়ে ম্যাচটাই নিজেদের হাত থেকে ফেলে দিল আায়ারল্যান্ড।ওমান দলটি অচেনা। অপরিচিত। এদের বিপক্ষে কেমন খেলে বাংলাদেশ এটাই এখন সবচেয়ে বেশি দেখার বিষয়। সতর্ক অবশ্যই থাকতে হবে। ছোট দল বলে অবজ্ঞা করার কিছুই নেই। শুধু নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলেই হবে। আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি, দায়িত্ব নিতে হবে টপ অর্ডারকে। স্ট্রাইক রেট বাড়াতে হবে। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট ১২৫ এর উপর হওয়া উচিৎ। আপাতত তামিম এসব অভাব ভালোভাবেই পূরণ করে দিচ্ছে। প্রথম ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও ছিল দুর্দান্ত।ওমানের বিপক্ষেও এভাবে স্বাভাবিক খেলা খেলতে হবে। কোনো সুযোগ দেয়া যাবে না। মূল পর্বের আগে বলা যায়, শেষ প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। নিজেদের পরখ করে দেখারও সুযোগ এটি। ব্যাটসম্যানরা যদি স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করতে পারে, তাহলে বোালাররা নিশ্চিত জয় এনে দেবে। কারণ, গত এক-দেড় বছরে আমাদের বোলাররা দারুণ ধারাবাহিক। সুতরাং, তাদের ওপর আস্থা রাখা যায়। বাকি কাজটা ব্যাটসম্যানদের।ওমান অচেনা-অজানা বলে একটা আতঙ্ক কাজ করছে অনেকের মনে। তাদের দলেও একজন দু’জন ভালো ক্রিকেটার আছে নিঃসন্দেহে। তবুও বাংলাদশের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। স্বাভাবিক ক্রিকেটটা খেলতে পারলে বাংলাদেশই উঠে যাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে।লেখক: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দেলের সাবেক অধিনায়ক।আইএইচএস/বিএ