শিক্ষা

যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন

যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর অপসারণ দাবি করে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন শুরু করেছে। রোববার সকাল থেকে যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস ছিলো শিক্ষার্থী শূন্য। এদিন কোনো ক্লাস হয়নি। তবে অধ্যক্ষ বহিরাগতদের ইউনিফর্ম পরিয়ে ক্লাস নেয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে তিনি আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ফোন করে ক্লাসে ফেরার জন্য বলেছেন, তা না হলে জামায়াত-শিবির বলে পুলিশে দেবার হুমকি দিয়েছেন। এদিকে, অধ্যক্ষ তার স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন ছাত্রাবাসে গিয়ে ক্লাসে উপস্থিত থাকার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোর্তজা আহমেদ, হাসানুজ্জামান, আবু সাঈদ, রিয়াদ হোসেন, ফরহাদ হোসেন, ইসমাইল হোসেন, সঞ্জিব সরকারসহ অনেকে জানান, ড. আব্দুল্লাহ স্বনামধন্য এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসাবে যোগ্য নন। তার অপসারণ দাবিতে যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রায় দুই হাজার ছাত্রছাত্রীর স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদন কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর দেয়া হয়েছে।তারা আরো অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ ড. আব্দুল্লাহ বিনা কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। অধ্যক্ষ বিশ্বব্যাংকের দেড় কোটি টাকার শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ না করে আটকে রেখেছেন। যা বাংলাদেশের অন্যান্য পলিটেকনিকে বিতরণ করা হয়েছে। তিনি অবৈধভাবে পলিটেকনিক প্রাইমারি স্কুলে বিউটি আক্তার নামে একজন শিক্ষিকাকে নিয়োগ দেন। একইভাবে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক কর্মচারী নিয়োগে ঘুষ ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে সোলায়মান, সুমন, হিরণ, চয়ন, ফাতেমা ও একরামকে নিয়োগ দিয়েছেন। এদের আগের নিয়োগের কর্মচারীদের থেকে বেশি বেতন দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগেও ঘুষ ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। ইএনটি বিভাগে শাহীনুর রহমান ও কম্পিউটার বিভাগে নাসরিন আক্তার নামে দুইজনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের নামে দুই হাজার ৫০০ ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ২০০ টাকা করে পাঁচ লাখ টাকা অর্থ উত্তোলন করে নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে না রেখে নিজ অ্যাকাউন্টে জমা রেখেছেন। তিন দফা অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হলেও অধ্যক্ষ অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেন।শিক্ষার্থী সঞ্জিব সরকার অভিযোগ করে বলেন, রোববার সকালে অধ্যক্ষ টেলিফোন থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে হুমকি দেন। ক্লাস বা আন্দোলন বন্ধ না করলে তাদের জামায়াত-শিবির পরিচয় দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেবেন।এসব অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ ড. আব্দুল্লাহ বলেন, যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কতিপয় শিক্ষক ও ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের কয়েকজন নেতার ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্ত হয়েছে। তাদের বুঝিয়ে ক্লাসে ফিরিয়ে আনা হবে। তিনি বিশ্ব ব্যাংকের দেড় কোটি টাকার শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ না করার ব্যাপারে বলেন ‘পুরো টাকার সংস্থান এখনো হয়নি’। আর মোবাইল ফোনে হুমকি দেয়ার বিষয়টি সঠিক না। উপাধ্যক্ষ তাদের আলোচনা করার জন্য ডেকেছিল। কিন্তু তারা না এসে সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। মিলন রহমান/এআরএ/এবিএস