দেশজুড়ে

বিস্ফোরণে ভস্মীভূত সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প, অন্ধকারে ৪২০ পরিবার

কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নে ৩৫০ কিলোওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার একটি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের মিনি গ্রিডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে ওই প্রকল্পের বিদ্যুৎ উৎপাদন। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে ৪২০টি পরিবার।

রোববার (৯ জুলাই) সকালে ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সরসাজাই গ্রামের কানেশিয়া সোলার মিনি গ্রিড প্রকল্পে ব্যাটারি অতিরিক্ত চার্জ হয়ে বিস্ফোরণে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

অগ্নিকাণ্ডে গ্রিডে থাকা ২৮৮টি ব্যাটারি পুড়ে সম্পূর্ণ গলে গেছে। ২৭টি ইনভার্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনে থাকা বৈদ্যুতিক ক্যাবলসহ কিছু সরঞ্জাম পুড়ে গেছে। এতে ৭-৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সোলার প্যানেলগুলো এখনো অক্ষত রয়েছে বলে জানা গেছে।

সারজাই গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা সুমন মিয়া বলেন, সকাল ৮টার দিকে প্রকল্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখে স্থানীয়রা প্রকল্প এলাকায় ছুটে যান। কিন্তু ব্যাটারির বিস্ফোরণ ও অ্যাসিডের ভয়ে কেউ আগুন নেভাতে কাছে যাওয়ার সাহস পাননি। অগ্নিকাণ্ডে ভবনে থাকা ব্যাটারি, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও বৈদ্যুতিক তার পুড়ে যায়।

আরও পড়ুন: অতিরিক্ত চার্জে সৌরবিদ্যুতের ব্যাটারি বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ড

তিনি আরও বলেন, নদীবেষ্টিত দুর্গম এলাকা হওয়ায় ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। সব পুড়ে যাওয়ার পর আগুন নিভে যায়। এ ঘটনায় এলাকার আশপাশে ৪২০টি পরিবার অন্ধকারে রয়েছে।

ওই গ্রামের দোকানদার তাইসার আলী বলেন, ‘এই সোলার প্যানেলের লাইন নিয়ে আমরা বাসায়, দোকানে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি। যদিও পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ আছে, তারপরও সবসময় পল্লী বিদ্যুৎ না থাকায় সোলার প্যানেল মিনি গ্রিড সংযোগ চালাই। ওই সৌরবিদ্যুতে আগুন লাগায় আর বিদ্যুৎ পাবো না। আমাদের অন্ধকারে থাকতে হবে।’

স্থানীয় আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ বলেন, ‘আমাদের গ্রামটি পুরোটাই বলা চলে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের ওপর নির্ভরশীল। প্যানেলটি পুড়ে যাওয়ায় বড় ক্ষতি হয়ে গেলো। জানি না কবে প্রকল্পটি আবার আলোর মুখ দেখবে।’

কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু বলেন, এ প্রকল্প থেকে আমার ইউনিয়নের ৪২০টি পরিবার বিদ্যুৎ পেত। আজ আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়েছে। ওই এলাকার মানুষজন ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে দুর্ভোগে পড়লো।

রাজিবপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সাব অফিসার আবু হানিফ বলেন, ঘটনাস্থলের চারপাশে নদী থাকায় আমরা যেতে পারিনি।

ফজলুল করিম ফারাজী/এসআর/জিকেএস