দেশজুড়ে

বৃষ্টি কম হওয়ায় জমেনি নৌকা কেনাবেচা

বর্ষা মৌসুমে হাওর বেষ্টিত জেলা কিশোরগঞ্জে পানিতে টইটম্বুর থাকে। হাওর ও নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। তাই এসব অঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন চলাচলের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ডিঙি নৌকা। তাই এ সময় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন ভৈরব উপজেলার কারিগররা। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু আছে পানির অভাব। বর্ষার ভরা মৌসুমেও হাওরের পানি বাড়েনি। ফলে নৌকার কেনাবেচা কম হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার শিমুলকান্দি, গজারিয়া, কালিকাপ্রসাদ, মিরারচর, সাদেকপুরসহ বিভিন্ন এলাকার গ্রাম্য হাট-বাজারগুলোতে বর্ষার আগমনের শুরু থেকে পুরোদমে বিভিন্ন ধরনের নৌকা তৈরি করছেন কারিগররা। তৈরিকৃত এসব নৌকা স্থানীয় ক্রেতাদের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, কটিয়াদী, রায়পুরা, বেলাব, সরাইল উপজেলায় বিক্রি হচ্ছে নৌকা।

উপজেলার শিমুলকান্দি বাজারে নৌকা তৈরির কারিগর মো. ছিদ্দিক মিয়ার সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের। তিনি বলেন, ১০-১৫ বছর ধরে নৌকা বানাচ্ছি। এ বছর বর্ষার পানি না বাড়ায় বাজারে নৌকার চাহিদা খুব কম। এখন পর্যন্ত ৩০-৩৫টি নৌকা বিক্রি করেছি। আরও কিছু নৌকা বিক্রির জন্য রেখেছি। একটা নৌকা পাঁচ-সাত হাজার টাকায় বিক্রি করি। তবে কাঠের ধরন ও ভিন্নতা এবং নৌকা ছোট বড় থাকায় দামও কম-বেশি হয়। ডিঙি নৌকা সাধারণত ৯-১০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ও নৌকার দাম বাড়েনি।

আরেক নৌকা তৈরির কারিগর মো.ইউসুফ বলেন, প্রতি বছরই বর্ষা এলে নৌকা তৈরি করি। এ বছর পানি কম আসায় নৌকা তৈরির চাপ কিছুটা কম। এরপরও ২০-২৫ টি নৌকা বিক্রি করেছি। প্রতিটি নৌকা ৩-৫ হাজার টাকা দরে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি।

গজারিয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা মাছুম মিয়া বলেন, নৌকা তৈরির কারিগররা ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী সাড়ে তিন থেকে ছয় হাজার টাকার মধ্যে নৌকাগুলো তৈরি করেন। গুণগতমান ভালো এবং দামেও সাশ্রয়ী হওয়ায় বিভিন্ন এলাকার ক্রেতাদের কাছে এখানকার নৌকার বেশ কদর আছে।

নৌকার ক্রেতা রসুলপুর গ্রামের কাসেম মিয়া বলেন, সারাবছরই নদীতে মাছ ধরি। প্রতি বছরই বর্ষার শুরুর দিকে নতুন পানিতে জাল দিয়ে মাছ ধরতে নতুন নৌকা কিনি। এ বছর ১০ ফুট লম্বা একটি ডিঙি নৌকা ছয় হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি।

সাদেকপুর বাজারের কাঠ ব্যবসায়ী হাকিমুল বলেন, কয়েক বছর যাবত কাঠের ব্যবসা করছি। তবে বর্ষার মৌসুমে প্রতিবছরই নৌকা তৈরি করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে থাকি। এ বছর বর্ষার পানি কম হওয়ায় বাজারে নৌকার ক্রেতা অন্য বছরের তুলনায় খুবই কম।

আরএএইচ/এসজে/এএসএম