রাতের আধাঁরে কিশোরগঞ্জ পৌর এলাকায় সরকার দলীয় লোকজনের ব্যনার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছে দুর্বৃত্তরা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেতাকর্মীরা।
সর্বশেষ রোববার (৬ আগস্ট) রাতে জেলা জজ কোর্টের রাস্তার পাশে টাঙানো স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছে দুর্বৃত্তরা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জ পৌরশহরে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে সরকারদলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য ও মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ডিজিটাল ব্যানার-ফেস্টুনের মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। সেইসব ব্যানার-ফেস্টুন রাতের আঁধারে ছিঁড়ে ফেলছে দুর্বৃত্তরা।
সর্বশেষ রোববার রাতে জেলা জজ কোর্টের রাস্তা পাশে লাগানো কিশোরগঞ্জ-১ (সদর - হোসেনপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেতাকর্মীরা।
এর আগে শহরের প্রাণকেন্দ্র কালীবাড়ি মোড়ে কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে দুর্বৃত্তরা।
কিশোরগঞ্জের স্থিতিশীল রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করতেই এমন কাজ করা হচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, ব্যানার-ফেস্টুন ছেঁড়া রাজনৈতিক নোংরামি কাজ। আমরা আগে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে এসেছি তখন তো এমন ছিল না।
সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির সমর্থক ওমর গণি কামাল বলেন, রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে। আর সেই প্রতিযোগিতা রাজনীতিকে সুন্দর করে তুলবে। যদি রাজনীতিতে প্রতিহিংসা সৃষ্টি হয় তাহলে পরিবেশ নষ্ট হয়। আসলে ব্যানার-ফেস্টুন ছেঁড়ার যে বিষয়গুলো ঘটছে এটা কাম্য নয়।
সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর সমর্থক কাজী জয়নাল আবেদীন সুলেমান বলেন, বিশেষ করে সৈয়দ পরিবারের লোকজনের ব্যানার-ফেস্টুন ছেঁড়া হচ্ছে। এগুলো কারা করছে আমার বুঝতে পারছি না। কাজগুলো রাজনৈতিক সৌন্দর্য নষ্ট করে।
সংসদ সদস্য হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আশফাকুল ইসলাম টিটু বলেন, আমি মনে করি না এ কাজ বিরোধী দলের কেউ করছে। আমি মনে করি বর্তমান সংসদ সদস্যের সঙ্গে আমার ঝগড়া সৃষ্টি করতেই কেউ রাতের আধাঁরে ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে নোংরা কাজ করে যাচ্ছে। তা নাহলে কেনো শুধু আমার ও বর্তমান সংসদ সদস্যের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছে। আরও অন্য প্রার্থীরও তো ব্যানার-ফেস্টুন আছে। তাদেরগুলো তো ছেঁড়া হচ্ছে না।
সাবেক অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাশেম মনে করেন, ব্যানার-ফেস্টুন ছেঁড়া রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়। এটি এক ধরনের প্রতিহিংসার বর্হিপ্রকাশ। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিহিংসার রাজনীতি হচ্ছে। আমার যাকে পছন্দ হচ্ছে না, রাতের আধাঁরে আমি যেভাবে হোক তার ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছি। এতে করে রাজনীতিতে নোংরামি সৃষ্টি হচ্ছে। এটা আসলে কাম্য নয়।
ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শ্যামল মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, রাতে শহরে নিয়মিত পুলিশ টহল দিচ্ছি। কারা কোন সময় এ ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছে তা ধরা যাচ্ছে না। যারা ব্যানার-ফেস্টুন টাঙাচ্ছেন তারা যদি আলাদা স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়ে বা সিসিটিভির ফুটেজ দিয়ে সহযোগিতা করেন তাহলে দুষ্কৃতিকারীদের ধরতে সহজ হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
এসকে রাসেল/এসজে/এমএস