টাঙ্গাইলে সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এতে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) যমুনাসহ জেলার প্রধান তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ছোট-বড় একাধিক নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই। ফলে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিম্নাঞ্চলে নতুন করে পানি প্রবেশ করছে।
এরই মধ্যে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়াসহ যমুনা চরাঞ্চলে বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। এসব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ভূঞাপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর ও মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন অব্যাহত আছে। ফলে ঘরবাড়ি, কবরস্থান, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। দিশেহারা নদীপাড়ের ভাঙন কবলিত মানুষ। এছাড়া নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশের ফলে রোপণকৃত ধানের চারা ও বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ছয় সেন্টিমিটার, ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে আট সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া বংশাই নদীর পানি মির্জাপুর পয়েন্টে তিন সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ও মধুপুর পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার কমে ৩ মিটার ৭৫ সেন্টিমিটার এবং কাউলজানি পয়েন্টে ১ মিটার ১৩ সেন্টিমিটার, ফটিকজানী নদীর নলচাপা পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার এসব নদীর পানি আরও কয়েক দিন বৃদ্ধির আশঙ্কা করছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া পূর্বপাড়া গ্রামের কৃষক মো. রাশেদ আলী জাগো নিউজকে বলেন, কয়েকদিন আগে প্রায় তিন বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণ করলাম। গত শুক্রবার বিকেল থেকে সেই জমিতে যমুনা নদীর পানি প্রবেশ করে তলিয়ে যাচ্ছে। আমার একার নয়, আশপাশের বেশ কয়েকজন কৃষকের রোপণকৃত ধানের চারা ও বীজতলা তলিয়ে গেছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে চারা পচে নষ্ট হবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, কিছুদিন আগেও টাঙ্গাইলের যমুনা নদীসহ জেলার ছোটবড় সব নদ-নদীর পানি কমতে থাকলেও হঠাৎ কয়েকদিন যাবত আবারও পানি বাড়ছে। ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টাঙ্গাইলের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়বে। এরপর পানি কমতে শুরু করবে।
তিনি আরও জানান, পানি বাড়লেও বড় ধরনের বন্যার সম্ভাবনা নেই।
আরিফ উর রহমান টগর/এসজে/এমএস