মাদারীপুরের কালকিনিতে পাগলা কুকুরের কামড়ে বিভিন্ন বয়সের ৩৫জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে এরমধ্যে শিশু শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এদিকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে একসঙ্গে এতো রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল ও আহতদের সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার কাশিমপুরের আলীনগর, কালীগঞ্জ, ফাসিয়াতলা, তালতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাগলা কুকুরের কামড়ে অনেক মানুষ আহত হয়েছেন। রোববার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত আহতদের হাসপাতালে আসতে দেখা যায়।
কুকুরের কামড়ে আহত কালকিনির আব্দুল ছাত্তার শিকদার বলেন, আমি বাড়ি থেকে বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন একটি কুকুর এসে পায়ে কামড় দেয়। আশপাশের লোকজন এসে আমাকে রক্ষা করেছে। পরে হাসপাতালে এসে টিকা দিয়ে এখন ভর্তি আছি।
বৃদ্ধ মফিজ উদ্দিন (৮০) বলেন, সকালে বাড়ির সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন একটি কুকুর এসে কামড় দেয়। এতে আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। প্রচণ্ড ব্যথায় কষ্ট হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে এক কুকুরের কামড়ে আহত ৪০
কালকিনির আলীনগরের টুমচর এলাকার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রূপালী, হালিমা, লাবিবা, শাহীন, ফরহাদ, ইসমাইলসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তারা বিদ্যালয়ে যাবার পথে কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
শিশু শিক্ষার্থীর রূপালীর বাবা ফজলুল সরদার ও আরেক শিক্ষার্থী হালিমার চাচা মুজাম্মেল বেপারী জানান, কালিগঞ্জের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাবার পথে পাগলা কুকুরের কামড়ে তারা অসুস্থ হয়েছে। এক সঙ্গে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে কুকুর কামড় দিয়েছে।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ঝুমা সেন বলেন, সকাল থেকে একটানা সমান তালে রোগী আসতেছে হাসপাতালে। সাধারণ রোগীদের সঙ্গে কুকুরে কামড় দেওয়া রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম অবস্থা। তবুও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. রিয়াদ মাহমুদ বলেন, একসঙ্গে ৮-১০টি এলাকায় কুকুরের কামড়ের রোগীর সংখ্যা বাড়ায় হাসপাতালে আসন সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পাগলা কুকুরগুলোকে বন্দি করা না হলে ভয়াবহতা বাড়তে পারে। এছাড়া এলাকার লোকজনদের সর্তক থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে কুকুরের কামড়ে নারী-শিশুসহ আহত ৩০
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. মুনির আহম্মদ খান বলেন, এরই মধ্যে হাসপাতালে ৩৫ জন কুকুরের কামড়ে ভর্তি হয়েছেন। তবে আরও রোগীর আসছে। অনেকেই ভর্তির অপেক্ষায় আছেন। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তবে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে টিকা আছে। সবাইকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/জেএস/এমএস