দেশজুড়ে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক, হাসপাতালে ইউনিট চালু

ঈশ্বরদীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু ইউনিট চালু করা হয়েছে। এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। বাকিরা ব্যবস্থাপত্র ও পরামর্শ নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কিছু রোগীর অবস্থার অবনতি হলে পাবনা, রাজশাহী ও ঢাকা স্থানান্তর করা হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত বছর ঈশ্বরদীতে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল। তাই এবার ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় আড়াই মাস আগে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু ইউনিট চালু করা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন প্রায় ২০ জন। এদের মধ্যে ১০ জন ভর্তি হয়েছেন। বাকিরা ব্যবস্থাপত্র ও পরামর্শ নিয়ে নিজ বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে চলে যাচ্ছেন। এর মধ্যে দুজন রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ডেঙ্গু টিকা ‘টিভি-০০৫’র সফল পরীক্ষা

ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন এলাকার বাসিন্দা ডেঙ্গু আক্রান্ত হামিদুর রহমানের (৩০) বাবা ফজলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ৮-১০ হলো জ্বর নিয়ে তিনি ঢাকা থেকে চলে এসেছেন। দুদিন আগে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে চিকিৎসকরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেছে।

ডেঙ্গু আক্রান্ত উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের সাজেদা খাতুন (৬০) ও রাবেয়া খাতুন (৯) দুজন সম্পর্কে দাদি-নাতিন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তিন দিন আগে তারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। দুজনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে জানিয়ে রাবেয়ার মা রওশনারা খাতুন বলেন, আমার মেয়ে ও শাশুড়ি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। তাদের নিয়ে তিনদিন ধরে হাসপাতালে রয়েছি। আমাদের বাড়ির আশপাশের আরও ১৫ জনের মতো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। এদের মধ্যে অনেকে নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

টিটিয়া গ্রামের রহমত উল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, আমার ছেলে নাসির উল্লাহ ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। শরীরে জ্বর নিয়ে ঢাকা থেকে এসেছেন। দুদিন হলো ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে।

আরও পড়ুন: বর্ষায় ডেঙ্গু থেকে বাঁচার ৭ উপায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) শফিকুল ইসলাম শামীম জাগো নিউজকে বলেন, আড়াই মাস ধরে এখানে ডেঙ্গু ইউনিট চালু রয়েছে। প্রতিদিন এখানে ৯-১০ জন রোগী ভর্তি হয়। এখানে তিন-চার দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। এর মধ্যে দুই একটি রোগীর অবস্থা অবনতি হলে তাদের পাবনা, রাজশাহী ও ঢাকায় পাঠানো হয়।

ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসমা খান জাগো নিউজকে বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। অসময়ের বৃষ্টিপাতের জন্য আশপাশে পানি জমছে। অতিরিক্ত আগাছার কারণে মশার উপদ্রব বেড়েছে। যার জন্য ডেঙ্গুর উপদ্রব বাড়ছে। আজ হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১০ জন ভর্তি হয়েছে।

শেখ মহসীন/আরএইচ/এমএস