দেশজুড়ে

সন্তানের মরদেহ পুকুরে ফেলে জিনে নেওয়ার গল্প সাজান মা

নড়াইলে শিশু আরাফ হত্যা মামলায় মৌসুমি খানমকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর বুধবার আদালতে তোলা হয় তাকে। গ্রেফতার মৌসুমি শিশু আরাফের মা। পুলিশ বলছে, সন্তানের মরদেহ পুকুরে ফেলে জিনে নেওয়ার গল্প সাজান তিনি।

এর আগে ২৭ নভেম্বর আরাফের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নড়াইলের লস্করপুর গ্রামে মেহগনি বাগানের পুকুরে পাওয়া যায় তার মরদেহ। শিশুটির বয়স এক মাস ২৭ দিন।

এ ঘটনায় শিশুর বাবা মো. মিলন মোল্যা ২৯ নভেম্বর নড়াইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহা. মেহেদী হাসান বলেন, এরপর ডিবি পুলিশ মৌসুমি খানমকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে শিশু হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মৌসুমির বরাতে পুলিশ জানায়, জন্মের পর থেকেই শিশু আরাফের শ্বাসনালী ছোট হওয়ায় শ্বাস নিতে সমস্যা হতো তার। দুধ খেতে গেলে বুকে আটকে যেত। মাঝেমধ্যে বমিও করতো সে। ঠান্ডাজনিত সমস্যাও ছিল। ফলে তাকে সব সময় চিকিৎসার মধ্যে রাখা হতো। ঘটনার দিন মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার সময় হঠাৎ আরাফের মুখ হা হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর নীল হয়ে যায় তার শরীর। তখন মৌসুমি ভেবেছিলেন, বাচ্চার বুকে মনে হয় দুধ আটকে গেছে। এরপর তিনি তার বাচ্চাকে সোজা করে ঝাকাঝাকি করতে থাকেন। মাথায় ফুঁ দেন। কিন্তু আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যায় শিশুটি।

পুলিশ আরও জানায়, এতে ভয় পেয়ে যান মৌসুমি খানম। তারপর তিনি তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এবং স্বামীর ভয়ে মৃত শিশু সন্তানকে রাতের অন্ধকারে বাড়ির পাশে মেহগনি বাগানের পুকুরে ফেলে দেন।

পুলিশ জানায়, এরপর বাড়ি এসে সবাইকে বলেন যে, তার ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনাটি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য জিন-পরি শিশুকে নিয়ে গেছে বলে গল্প সাজান।

হাফিজুল নিলু/জেডএইচ/