‘আপনারা কি কেনো দিন দেখছেন কোনো একটা এজেন্সি রাজনৈতিক নেতাকে এভাবে হুমকি দিতে যে ট্রাকে না উঠলে গুলি করা হবে। এসব ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এসব কীসের আলামত। এটা কি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার আলামত।’ এভাবেই অভিযোগ করেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার সদর ঈদগাহে পথসভায় কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া আসনের সাবেক এ সংসদ সদস্য এসব অভিযোগ করেন।
বর্তমান সংসদ সদস্য পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করে নূর সাহেব হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে রাতারাতি নৌকাকে নিয়ে ট্রাকে উঠে গেছেন। দুঃখজনক ব্যাপার পুলেরঘাট বাজারে যেখানে পার্টি অফিস (নৌকা প্রতীকের অফিস) ছিল। এখানে নৌকা ভেঙে ট্রাকের অফিস করা হয়েছে। যে যার রাজনীতি করতে পারে। কিন্তু তিনি মানুষকে বিভিন্ন প্রলোভন ও হুমকি দিচ্ছেন। তিনি পুলিশের সাবেক প্রধান ও বর্তমান এমপি এসব পদ ব্যবহার করে এগুলো করছেন।
আরও পড়ুন:নৌকা ছেড়ে রঞ্জনের ট্রাকে এমপি নূর মোহাম্মদ
তিনি আরও বলেন, ‘একটা এজেন্সিও নেতাকর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। আমি ভাবতে পারি না কোনো সরকারি এজেন্সি আমার কর্মী-সমর্থকদের ভয়-ভীতি এবং হুমকি দিচ্ছে। আমাদের কাছে রেকর্ড আছে টেলিফোন নাম্বার আছে কারা কার কাছে ফোন করে এসব হুমকি দিচ্ছে। আপনারা যদি চান আমি দেবো। সুন্দর নির্বাচনকে নস্যাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে যারা, তারা দেশের শত্রু, জাতির শত্রু, আমাদের শেখ হাসিনার শত্রু। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে না হয় সেই চেষ্টাই তারা করছে।
সাবেক এ সংসদ সদস্য আরও বলেন, আমরা এ বিষয়গুলো জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানাইনি তবে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে তারা আশ্বস্ত করেছে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু এখনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নির্বাচন অফিসের মিটিংয়ে আমি বলেছি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। আমরা সাদাকালো পোস্টার লাগিয়েছি। কিন্তু এখনো রঙিন বিলবোর্ড রয়ে গেছে, যেগুলো নায়ক নায়িকারা লাগায়। এখনো ওই রঙিন বিলবোর্ড অপসারণ করা হয়নি। আমি বলতে চাই নির্বাচনে একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করা হোক। যেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়।
আরও পড়ুন:নৌকা-ঈগল জিতলে জাতিসংঘের সামনে বলবো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি
পথসভায় পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহবুবুর রহমান, শামসুদ্দোহা, ভিপি ফরিদ উদ্দিন, জেলা শ্রমিক লীগের উপদেষ্টা আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ, উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি বাবুল আহমেদ, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ভিপি হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক একরাম হোসেন টিপু, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল আলম, সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ তুহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পথসভায় পাকুন্দিয়া উপজেলার পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মিছিল নিয়ে সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
এর আগে রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ কটিয়াদী উপজেলায় নিজ বাসভবনে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও আসন্ন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ট্রাক প্রতীক) মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জনকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন জানান। এ সময় তার অনুসারীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল কাহহার আকন্দ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এর টেলিভিশন প্রতীকের প্রার্থী বিল্লাল হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আম প্রতীকের প্রার্থী আলেয়া, গণফ্রন্টের মাছ প্রতীকের প্রার্থী মীর আবু তৈয়ব মো. রেজাউল করিম।
এছাড়া দুই স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন ও ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত সোহরাব উদ্দিনসহ মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নৌকা, ঈগল ও ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীদের ভেতর ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস মিলছে।
এসকে রাসেল/এনআইবি/জেআইএম