জাতীয়

বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন: বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা

রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। মামলায় অজ্ঞাত হিসেবে আসামিদের উল্লেখ করা হয়েছে। রেলওয়ে থানায় মামলাটি লিপিবদ্ধ হয়েছে।

শনিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) এস এম নুরুল ইসলাম।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার (আরএসবি) আনোয়ার হোসেন।

আরও পড়ুন: বেনাপোল এক্সপ্রেসের আগুন পরিকল্পিত: ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার

তিনি বলেন, মামলায় ট্রেনে নাশকতা চালিয়ে যাত্রী হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) এস এম নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা করেন।

রেলওয়ে পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন উইং হামলাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে কাজ করছে বলেও জানান পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন।

আরও পড়ুন: ঢাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন

এদিকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের লালবাগ বিভাগ। তারা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবী, মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য মোহাম্মদ মনসুর আলম, কামরাঙ্গীরচর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল, ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান, দেলোয়ার, কবির, কামরাঙ্গীরচর থানার যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন ও লালবাগ থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন স্বপন।

শনিবার দুপুরে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের জানান, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির হাইপ্রোফাইল নেতারা ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক ও কাজী মনসুর। তারা ভিডিও কনফারেন্সে এসে বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে বিশেষ করে নরসিংদীর কাছে সুবিধাজনক স্থানে অগ্নিসংযোগ করার কথা। আরেকটি স্থান কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ লাইনে আপ-ডাউনে সুবিধাজনক স্থানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

আরও পড়ুন: বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুনে চারজন নিহত: ফায়ার সার্ভিস

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, দক্ষিণ যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নের তত্ত্বাবধানে যুবদলের কয়েকটি টিম লালবাগের কয়েকজন দাগি সন্ত্রাসী দিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন লাগানো হয়। ভিডিও কনফারেন্সে বলা হয়-ট্রেনে কে আগুন লাগাবেন? কনফারেন্সে থাকা ১০-১২ জনের একজন বলেন তিনি আগুন লাগাতে পারবেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে তার নামটি আমরা বলবো না। এছাড়া ভিডিও কনফারেন্সে থাকা আরও তিনজন আগুন লাগাতে পারবে বলে জানায়। তারা ২০১৩-১৪ সালে বিভিন্ন এলাকায় বোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। তারা মিলে যাত্রাবাড়ীর আশপাশের এলাকা থেকে ট্রেনটিতে অগ্নিসংযোগ করে।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, যে মোবাইল থেকে ভিডিও কনফারেন্স করা হয়েছিল সেই মোবাইলটি উদ্ধার করেছে ডিবি। মোবাইলটি কাজী মনসুরের। তিনি আমাদের কাছে গ্রেফতার আছেন। যারা এক সময় জেলখানায় দাগি আসামি হিসেবে পরিচিত ছিল তারা এই অগ্নিসংযোগ করে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের রিমান্ডে এনে ট্রেনে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

টিটি/জেএইচ/জেআইএম