প্রত্যাশিতভাবেই বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে নগরায়ণ এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে দেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ শহর বা নগরাঞ্চলে বসবাস করছে এবং নগরবাসীর প্রায় ৩২ শতাংশই ঢাকায় বাস করে। রাজধানী ঢাকার ক্ষেত্রে সমগ্র রাজউক এলাকায় বর্তমান জনসংখ্যা ২৬ মিলিয়ন এবং জনশুমারি-২০২২ অনুযায়ী ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় বিদ্যমান জনসংখ্যা প্রায় ১০ দশমিক ২৮ মিলিয়ন।
আর বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৩৯ দশমিক ৩৫ হাজার এবং উত্তর সিটি করপোরেশনে বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৩০ দশমিক ৪৭ হাজার মানুষ বাস করে।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে (কেআইবি) স্থায়িত্বশীল নগরায়ণ: সমস্যা ও সমাধান বিষয়ক এক বিশেষ সম্মেলনের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান বক্তারা। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে নগর গবেষণা কেন্দ্রের (সিইউএস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
বাপা সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সহ-সভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিবের সঞ্চালনায় সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর বক্তব্য পাঠ করেন বাপা সহ-সভাপতি ও বেন-এর প্রতিষ্ঠাতা ড. নজরুল ইসলাম।
সম্মেলনে স্বাগত বক্ত্যব দেন বাপার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
নজরুল ইসলাম সম্মেলনের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে নগরায়ণের প্রবণতা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। গ্রাম থেকে লোক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে শহরের দিকে ধাবিত হচ্ছে। গ্রামীণ সমাজব্যবস্থায় কৃষি উৎপাদন ব্যতীত অন্য পেশা গ্রহণের সীমিত সুযোগ ও গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থায় ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য-বস্ত্র, শিক্ষা-চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা এবং পাশাপাশি জলবায়ুজনিত পরিবর্তনের বিভিন্ন প্রভাবের কারণে মানুষ অনেকটা বাধ্য হয়েই শহরের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
প্রধান অতিথি হিসেবে সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, অতি নগরায়ণের ফলে যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং নগরায়ণের ঝুঁকি বাড়ছে। সমন্বয়হীনতার কারণে দ্রুত নগরায়ণ সম্প্রসারিত হচ্ছে। আবাসন কোম্পানিগুলোর চটকদার বিজ্ঞপ্তির ফলে দেশের মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে।
এমএমএ/এমআইএইচএস/জেআইএম