দেশজুড়ে

চাঁদপুর শহররক্ষা বাঁধের ১৬৫ মিটার ধস

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে চাঁদপুর শহররক্ষা বাঁধের ৮টি স্থানে অন্তত ১৬৫ মিটার সিসি ব্লক ধসে মেঘনা নদীতে দেবে গেছে। সোমবার (২৮ মে) দিনভর টানা বৃষ্টিপাত ও মেঘনার উত্তাল ঢেউয়ে বিকেলে বাঁধে ভাঙন ধরে। তাৎক্ষণিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করে।

দুপুরের পর থেকে ঢেউয়ের তীব্রতা বাড়তে থাকে। পাশাপাশি টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় কয়েক ফুট উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে তীরে। পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে ভাঙন আতঙ্কে নদী তীরের অনেক লোকজন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন। এখনো স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কার্তিক সাহা বলেন, বর্ষা এলে প্রতি বছর নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। এরইমধ্যে অনেকেই বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ভাঙন দেখা দিলে কর্মকর্তারা আসেন নদীতে বালির বস্তা ফেলতে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। যে পরিস্থিতি, রাতে বাড়িঘর টেকে কিনা শঙ্কিত।

ক্ষতিগ্রস্ত সাবিত্রি সাহা ও সবিতা সাহা বলেন, ঘর ভাঙনে ভাঙনে আর কিছু নেই। আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। বাঁধ ভাঙার কারণে এবারও ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারের কাছে দাবি করছি, এখানে যাতে দ্রুত স্থায়ী বাঁধ করা হয়।

মঙ্গলবার (২৮মে) বেলা সাড়ে ১১টায় গিয়ে দেখা যায়, শহরের পুরান বাজার হরিসভা মন্দির ও বাকালি পট্টি এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন স্থানে শ্রমিকরা জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলা অব্যাহত রেখেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা কাজের তদারকি করছেন।

ভাঙন কবলিত স্থান পরিদর্শনে আসা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলামের কাছে ভাঙনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শহররক্ষা বাঁধের পুরান বাজার এলাকায় ৮টি স্থানে প্রায় ১৬৫ মিটার সিসি ব্লক ধসে নদীতে তলিয়ে গেছে। ভাঙন প্রতিরোধে কাজ চলছে। এই কাজ অব্যাহত থাকবে।

চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, পুরান বাজার এলাকায় ১০-১২ জন ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে। এখানে স্থায়ী বাঁধ হবে, সেটির টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। ৮২৭ কোটি টাকার শহররক্ষা বাঁধ প্রকল্পটি হয়ে গেলে আর আমাদের মধ্যে আতঙ্ক থাকবে না।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান বলেন, পুরান বাজার শহররক্ষা বাঁধে ভাঙনের খবর পেয়েছি। এরইমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আশা করি বড় ধরনের কোনো সমস্যা হবে না।

শরীফুল ইসলাম/এফএ/জেআইএম