নীলফামারী জেলা কারাগারে ধারণক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি আসামি রাখা হয়েছে। কারাগারে ২২৮ জন আসামি ধারণক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ৫০৯ জন। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশের গ্রেফতার অভিযান শুরু হওয়ায় প্রতিদিন নতুন নতুন বন্দি আসছেন কারাগারে। তবে এজন্য আসামি থাকা ও খাবারে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না বলে দাবি কারা কর্তৃপক্ষের।
জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, নীলফামারী জেলা কারাগারটি ১৯১৫ সালে নির্মিত হয়। সেসময় কারাগারের ধারণক্ষমতা ছিল ৯৬ জন। তবে কারাগারটি বেশ ছোট, পুরোনো, জরাজীর্ণ এবং প্রতিনিয়ত বন্দি বাড়ার কারণে ১৯৯৮ সালে পাঁচমাথা বাইপাস মোড়ে ৭.৫০ একর জমির ওপর নতুন কারাগার তৈরি হয়। আসামি ধারণক্ষমতা নির্ধারণ করা হয় ২২৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২১০ জন এবং নারী ১৮ জন। ধারণক্ষমতা ২২৮ জন থাকলেও বর্তমানে জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন ৫০৯ জন। যার মধ্যে নারী ১৭ জন।
এসব বন্দিদের জন্য জেল সুপার, জেলার ও ডেপুটি জেলারসহ ৭৬ জন কারারক্ষী আছেন। বর্তমান আন্দোলনকে ঘিরে কারাগারে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
কারা সূত্র আরও জানায়, জেলা কারাগারে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন ৩৪ জন, জেএমবি চারজন, ভারতীয় নাগরিক (আরপি) একজন এবং অন্যান্য মামলার আসামি ৪৫৬ জন।
আরও পড়ুন
ধারণক্ষমতার তিনগুণ বন্দি নারায়ণগঞ্জ কারাগারেআসামিদের খাবার তালিকায় রয়েছে সকালে রুটি, সবজি, সুজি, খিচুড়ি; দুপুরে ভাত, সবজি ও ডাল এবং রাতে ডাল, ভাত, মাছ বা মাংস। প্রতি সপ্তাহে খাবারের তালিকা পরিবর্তন করা হয়। বিশেষ দিনগুলোতে দেওয়া হয় উন্নত খাবার।
সদ্য কারামুক্ত আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এক সপ্তাহ কারাগারে ছিলাম। ভেতরে খাওয়া-দাওয়ার সমস্যা বেশি। অনেক বন্দি একসঙ্গে ঘুমাতে হয়। কারাগারে অনেক কষ্ট।’
এ বিষয়ে জেল সুপার রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ধারণক্ষমতার তুলনায় আসামি বেশি রয়েছে। তবে খাবারের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রংপুর বিভাগের অন্যান্য জেলার তুলনায় এ কারাগারে আসামিরা অনেক ভালো আছেন। আসামিদের জন্য শিক্ষা ও বিনোদনের ব্যবস্থা আছে।’
নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ জাগো নিউজকে জানান, কারাগারে নিয়মিত পরিদর্শনে বন্দিদের খোঁজখবর নেওয়া হয়। তবে কারাগারের পরিধি বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। দ্রুত কারাগার সম্প্রসারণ করা হবে।
ইব্রাহিম সুজন/এসআর/এমএস