মুন্সিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর দুটি ভিডিও এসেছে গণমাধ্যমে। যারা ছাত্রদের ওপর গুলি চালিয়েছেন তারা জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা। এরমধ্যে অস্ত্রধারী একজন শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম নোবেল, অপরজন সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন সাগর। পরিচয় এড়াতে ঘটনার দিন হেলমেট, গামছা পরে গুলি করেন তারা। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর দুজনই পালিয়েছেন।
তবে ভিডিও ফুটেজ ও স্থানীয়দের তথ্যে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে। এরমধ্যে একটি ভিডিও ৪ আগস্টের ও অপরটি ১৯ জুলাইয়ের।
গামছা-হেলমেট পরে গুলি করেন সাগর৪ আগস্ট শহরের কৃষি ব্যাংক এলাকায় মিছিল নিয়ে বের হন ছাত্র-জনতা। এসময় হেলমেট পরে এক যুবককে ফিল্মি কায়দায় আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করতে দেখা যায়। তখন তার গায়ে ছিল বেগুনি রংয়ের শার্ট, গলায় গামছা। হাতে ছিল রুপালি রংয়ের একটি পিস্তল।
এই যুবকই মুন্সিগঞ্জ শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন সাগর।
এর কিছুক্ষণ পর একই শার্ট পরা অবস্থায় শহরের সুপার মার্কেট শহীদ চত্বরে দেখা যায় সাগরকে। তবে তখন তার মাথায় হেলমেট ছিল না।
সাগরের নেতৃত্বে এর আগেও ১৭ জুলাই সুপার মার্কেট এলাকায় ছাত্রদের ওপর হামলা হয়।
গুলি চালিয়ে আন্দোলনকারীদের তাড়া করেন নোবেল১৯ জুলাই মুন্সিগঞ্জ-মুক্তারপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন ছাত্র-জনতা। এসময় তাদের ওপর হামলা করেন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
হামলাকারীদের মধ্যে অস্ত্র হাতে দেখা যায় শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নোবেলকে। তার মাথায় হেলমেট থাকলেও স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছিল তার মুখ। আরেকটি ভিডিওতে শহরের উপকণ্ঠে নয়াগাঁও এলাকায় ছাত্রদের তাড়া করতে দেখা যায় নোবেলকে।
এই দুজন ছাড়াও জুলাই ও আগস্ট মাসে বিভিন্ন সময় ছাত্রদের ওপর আরও বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীকে গুলি করতে দেখা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, ৪ আগস্ট হামলা ও হত্যার ঘটনায় সাগর-নোবেলকে দুটি মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) খাইরুল হাসান বলেন, আপনারা যা দেখেছেন আমরা তাই দেখেছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে অস্ত্রধারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে চেষ্টা চলেছে।
আরাফাত রায়হান সাকিব/জেডএইচ/এএসএম