আন্তর্জাতিক

ভারতের ‘হংকং’ প্রকল্পে হুমকির মুখে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ

ভারতের পূর্ব উপকূলের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে একটি বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। ভারত সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী বছরগুলোতে গ্রেট নিকোবর দ্বীপকে হংকংয়ের মতো দেখতে একটি নগরে রূপান্তরিত করা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা হবে একটি ট্রান্সশিপমেন্ট হার্বার, বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিমানবন্দর এবং নতুন নগর। ব্যয় হবে প্রায় ৭২ হাজার কোটি রুপি (৯০০ কোটি ডলার)।

Advertisement

১৬৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত প্রকল্পটি ভারত মহাসাগর ও সুয়েজ খালের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুটগুলোর সঙ্গে এ অঞ্চলের সংযোগ স্থাপন করবে। ভারত সরকার আশা করছে, প্রকল্পটি ৩০ বছর পর ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষের বসবাসের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগের কারণে দ্বীপবাসীরা তাদের ভূমি, সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। এ অঞ্চলে বেশ কিছু বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ উপজাতি, যেমন- জারাওয়া, নর্থ সেন্টিনেলিজ এবং শোম্পেন বসবাস করে।

আরও পড়ুন>>

Advertisement

সীমান্ত বন্ধ হলে বড় ক্ষতি ভারতের, ঝুঁকিতে লাখো মানুষের জীবিকা বাংলাদেশি রোগী না থাকায় বিপাকে কলকাতার হাসপাতালগুলো ব্যবসায় মন্দা, বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা দিতে চান কলকাতার ব্যবসায়ীরা

প্রকল্পটির কারণে ব্যাপক পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরাও। এতে গ্রেট নিকোবার দ্বীপের ৮০ শতাংশ বন ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, যা অন্তত ১ হাজার ৮০০ প্রাণী ও ৮০০ প্রজাতির উদ্ভিদের আবাসস্থল।

যদিও সরকার দাবি করেছে, প্রকল্পটির জন্য কেবল ১৩০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পরিষ্কার করা হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বাস্তবে আরও অনেক বেশি এলাকা সাফ হতে পারে।

ভারতের পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব দাবি করেছেন, প্রকল্পটি দ্বীপবাসীদের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রকল্প শোম্পেনসহ অন্যান্য উপজাতিদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলবে। এছাড়া, এই উন্নয়ন প্রকল্পটি সংলগ্ন সামুদ্রিক জীবনের ওপরও প্রভাব ফেলবে।

মানব সমাজ ও সংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ অ্যানিস জাস্টিন বলেন, বন হলো আমাদের সুপারমার্কেট। আমরা এই দ্বীপগুলোর বন থেকে প্রায় সবকিছুই পেয়ে থাকি। এটি আমাদের বাঁচার উপায়।

Advertisement

সূত্র: বিবিসিকেএএ/