জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শিক্ষক মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে প্রশাসন। আগামী জুলাই মাস থেকে এই পদ্ধতি চালু হবে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও ক্লাস মনিটরিংয়ের পাশাপাশি শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস পরিচালনা করছেন কি না—তা পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।
Advertisement
সোমবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম সিন্ডিকেট সভা শেষে জাগো নিউজকে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষকরা এখন আর ক্লাস নিয়ে হেলাফেলা করতে পারবে না। আজকের ক্লাস কালকে নেওয়ার সুযোগ নেই। সকাল ৮টার ক্লাস ১০টার সময় নিতে পারবে না। নির্ধারিত সময়েই ক্লাস নিতে হবে।
উপাচার্য বলেন, প্রতিটি বিভাগের শ্রেণি-প্রতিনিধিরা নির্দিষ্ট অনলাইন প্ল্যাটফর্মে শিক্ষক মনিটরিং রিপোর্ট জমা দেবে। এসব রিপোর্ট দেখতে পারবেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান, অনুষদের ডিন, ট্রেজারার এবং উপাচার্য।
জানা যায়, আজকের সিন্ডিকেটে মোট ৩০টি অ্যাজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যার অধিকাংশই শিক্ষকদের পদোন্নতি ও ছুটি সংক্রান্ত।
Advertisement
এদিন সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা হয় আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অবন্তিকা আত্মহত্যার বিষয়। শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী অভিযুক্ত ছাত্র আম্মানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার চূড়ান্ত করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি আরও দুজন শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে কি না তার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক দ্বীন ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত ও ফৌজদারি মামলার অন্তর্ভুক্ত থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এছাড়া, এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে তৎকালীন আইন বিভাগের চেয়ারম্যান সরকার আলী আককাস ও তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামালকে শোকজ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিন সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক লীমা হক ও দর্শন বিভাগের শিক্ষক সোচনা শোভার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সিন্ডিকেটে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের অনেক আগেই পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল, তারা এখনো পদত্যাগ করেননি। তবে ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আজকেও তাদের পদত্যাগ করতে বলেছি।
Advertisement
সিন্ডিকেট সভার শেষ দিকে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইসা আহমেদ লিসা আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন উপাচার্য।
এদিন সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ডিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াসউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমসহ অন্যান্য সিন্ডিকেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তৌফিক হোসেন/এমআরএম/এএসএম