শহীদ জিয়াকে স্বৈরশাসক বলা সাংবাদিকের পাশে ছাত্রদল

বিএনপিকে নালিশ পার্টি, শহীদ জিয়াউর রহমানকে স্বৈরশাসক ও জুলাই আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ আখ্যা দেওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিকের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে ছাত্রদল।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলে ওয়াসিফ আল আবরার নামে ওই সাংবাদিককে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতা ও ছাত্র আন্দোলনকারীদের দুর্বৃত্ত আখ্যার অভিযোগে মারধর করেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় মারধরকারীদের ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী নেতাকর্মী আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
এদিকে ঘটনার আগে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশনা দিলেও ছাত্রদলের এক নেতা ও সহ-সমন্বয়কদের কয়েকজনের প্রশ্রয়ে তিনি হলে ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মারধরের পর কুষ্টিয়ায় গিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে ছাত্রদলের কয়েকজন সাক্ষাৎ করেছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে বিএনপি ও শহীদ জিয়া সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যকারীকে নিয়ে ছাত্রদলের বিবৃতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত পোস্ট দিয়ে সমালোচনা করছেন। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝেও এ নিয়ে আলোচনা চলছে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশ না করে সংগঠনটির এক কর্মী বলেন, ‘শিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই ভালোভাবে খোঁজখবর না নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। এখন বিবৃতি নিয়ে আরও বেশি সমালোচনা হচ্ছে। ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এগুলো বিএনপি-ছাত্রদলের কেউ মেনে নিতে পারে না।’
এ বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিজ্ঞাপন
শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘আমাদের আদর্শিক নেতাকে নিয়ে তার মন্তব্যের বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। বিবৃতি দেওয়ার পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে জানতে পেরেছি। তার কাছে এটার ব্যাখ্যা জানতে চাইলে সে কোনোভাবে একটা ব্যাখ্যা দিয়েছে। আমরা চাই প্রশাসনিকভাবে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিচার হোক।’
হল সূত্রে জানা যায়, আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছিলেন। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রভোস্টকে দেখিয়ে তাকে নামানোর দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রভোস্ট তাকে হল থেকে নামিয়ে দেয়। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে আবারও ওই হলে অবস্থান করতে শুরু করলে শিক্ষার্থীরা ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে নেননি। পরে রাত ১২ টা ২০ মিনিট নাগাদ তাকে হল থেকে নেমে যেতে বলা হলে এক পক্ষ প্রতিরোধ করায় শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়।
এদিকে গত ৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা শাখা ছাত্রলীগের অফিস ভাঙচুর চালায় আন্দোলনকারীরা। এতে একটি সংবাদে আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ বলে আখ্যা দেন ওয়াসিফ। এছাড়াও তার উপজেলার নামে একটি গ্রুপে শহীদ জিয়া ও বিএনপিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যসহ আওয়ামী লীগকে নিয়ে ইতিবাচক অনেক লেখা দেখা যায় তার। এছাড়া উপজেলায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
শাহ আজিজুর রহমান হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এটিএম মিজানুর রহমান জানান, ‘ওই ছেলেটা দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয়ে হলে ছিল। হলে বৈধ সিট ছিল না৷ তাই লিগ্যালি সময় নিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছিল। আবারও কেন হলে অবস্থান করলো এটা তদন্ত করে দেখা যাবে। এর আগেও আমি তার রুমমেটকে কল দিয়ে বলেছিলাম যে, সে যেন হলে অবস্থান না নেন।’
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজামান বলেন, ‘দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এমএন/জিকেএস
বিজ্ঞাপন