ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলা শিক্ষককে ধাওয়া দিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:২৪ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন আওয়ামী লীগপন্থি নীলদলের শিক্ষক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়েরসহ একাধিক শিক্ষার্থী তাকে ধাওয়া করেন। ধাওয়া খেয়ে ওই শিক্ষক দ্রুত তাকে বহন করা একটি প্রাইভেট কার গাড়িতে উঠে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এ সময় তার সঙ্গে একই বিভাগের আরেক নীল দলপন্থি শিক্ষক অধ্যাপক জিনাত হুদাও উপস্থিত ছিলেন।

ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‌‘স্বঘোষিত রাজাকারের বাচ্চাগুলোরে ধইরা ধইরা ব্রাশফায়ার দিতে হবে’ বলা আওয়ামী লীগের কুলাঙ্গার শিক্ষক আকম জামাল, নীল দলের পোস্টেড নেতা জিনাত হুদাসহ ৫ জন ফ্যাসিস্টের দোসর শিক্ষক আজকে ক্যাম্পাসে এসে গোপন মিটিংয়ে যুক্ত হয়েছিলেন। খবর পেয়ে আমরা তাদের পাকড়াও করে পুলিশে দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আনফরচুনেটলি আগে থেকে প্রস্তুত করে রাখা গাড়িতে উঠে পালিয়ে যায় কুলাঙ্গারগুলো। এরা চিহ্নিত খুনিদের দোসর। এদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা সব বয়কট করেছে। তারপরও এরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার সাহস কীভাবে পায়! প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে হবে। খুনিদের সাথে কোনো সহাবস্থানের সুযোগ নেই। সবগুলোকে বিচারের আওতায় আনতে হবে দ্রুত।’

তবে গোপন বৈঠকের কথা অস্বীকার করে আ ক ম জামাল বলেন, অনেকদিন ধরে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো কার্যক্রম ছিল না, তাই আজ আমরা একটি স্মারকলিপি নিয়ে ভাইস চ্যান্সেলরের অফিসে যাই। ভাইস চ্যান্সেলর না থাকা তার পিএসের কাছে স্মারক লিপি জমা দিই। পরে আমরা একসাথে সমাজবিজ্ঞান ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে চা খেতে যাই। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করে এবং গাড়িতে উঠা পর্যন্ত আমাকে আটকানোর চেষ্টা করেন।

‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলা শিক্ষককে ধাওয়া দিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

তিনি বলেন, স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সময় আমাদের সঙ্গে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা, বোটানি বিভাগের অধ্যাপক আজমল হোসেন ভুইয়া ও ফাইন্যান্স বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, এনভায়রনমেন্ট সাইন্স বিভাগের অধ্যাপক তৌহিদা রশিদ উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক জামাল উদ্দীন দীর্ঘদিন ধরে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য বেশ আলোচনায় ছিলেন। সর্বশেষ ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় ঘোষণার পর তা প্রত্যাখ্যান করে ‘১০০১ জন’ আওয়ামীপন্থি শিক্ষকের যৌথ বিবৃতিতেও তার নাম ছিল।

জুলাই আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হুমকি ও মামলা দিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ আগস্টের পর থেকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও ছয়জন শিক্ষক একই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক হিসেবে পরিচিত জামাল উদ্দীন জুলাই মাসের কোটা আন্দোলনের সময় ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাবিরোধীদের ফেসবুক থেকে আনফ্রেন্ডও করেন। ২০২৪ সালের ১২ জুলাই এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছিলেন, যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা সমর্থন করেন না, তারা আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাবেন না। সবাইকে আনফ্রেন্ড করা হয়েছে।

এমএইচএ/এফএআর/এমআরএম/এএসএম