ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

জাবিতে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ০৯:১২ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সংবাদ প্রকাশের জেরে এক শিক্ষার্থী সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে আফম কামালউদ্দীন হলের একদল শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী তানজীর হোসাইন সাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দিনগত রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় আফম কামালউদ্দীন হলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাংবাদিক।

অভিযোগে অভিযুক্ত হিসেবে রসায়ন বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহমেদ শামীম, দর্শন বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের কামরুল হাসান রামিম, ইতিহাস বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের ইমন শাহ, বাংলা বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের নোমানসহ ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তারা সবাই আফম কামালউদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আফম কামালউদ্দীন হলে নন অ্যালোটেড ও সাবেক শিক্ষার্থীদের ফিস্টের টোকেন না দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে হলের শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টসহ হল প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের ডাইনিং রুমে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় ডাইনিং রুমে বসে থাকা শিক্ষক ও হল সংসদের ভিপি-জিএসের দিকে লক্ষ্য করে পানির বোতল নিক্ষেপ করা হয়।

পরে প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান ও গালিগালাজ করা হয়। উত্তেজনা আরও বাড়লে জাকসুর এক সদস্য ডায়নিংয়ে প্রবেশ করতে চাইলে তাকেও স্লোগান ও গালিগালাজের মুখে পড়তে হয়। একপর্যায়ে ডায়নিংয়ের ফটক এবং পরে হলের প্রধান ফটকেও তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় হলের ভেতরে প্রবেশ করা সাংবাদিকসহ কাউকে বের হতে দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাত দেড়টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান হলে এসে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এসব ঘটনার সংবাদ প্রকাশ করেন তানজীর হোসাইন সাকিব।

সংবাদ প্রকাশের পরপরই তাকে লক্ষ্য করে একদল শিক্ষার্থী হামলা ও হত্যাচেষ্টায় লিপ্ত হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে হল এলাকা ত্যাগ করার সময় ‘ওই নিউজ করছে’, ‘ধর’, ‘মার’—এমন স্লোগান দিয়ে ৭ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী তাকে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে তাকে হলের প্রধান গেটে ধরে ফেলে এবং ক্যামেরার আওতার বাইরে নিয়ে গিয়ে মারধরের চেষ্টা করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ শামীমের নেতৃত্বে কামরুল হাসান রামিমসহ অভিযুক্তরা তাকে হলের ভেতরে নিয়ে গিয়ে মারধর ও মব তৈরি করে হত্যাচেষ্টা চালায়। এ সময় তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেও অভিযুক্তরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে সহকর্মী সাংবাদিকদের সহায়তায় তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সক্ষম হন। তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে জাবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী মামুনসহ অন্যদের প্রতিও মব সৃষ্টি করে মারধরের চেষ্টা, হুমকি ও গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

ভুক্তভোগীর দাবি, আফম কামালউদ্দীন হল ও আশপাশের এলাকায় স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরায় পুরো ঘটনার ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে। ঘটনার পর থেকে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং তার স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান।

অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শামীম বলেন, গতকাল আমাদের হলে বিজয় দিবসের ফিস্ট মিল সংক্রান্ত একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন সাংবাদিক একটি নিউজ করেছেন সেখানে কিছুটা অসংগতি মনে হয়েছে আমাদের কাছে। তাই তার সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে ডাকি। কিন্তু অভিযোগকারী সাংবাদিক আমাদের কথা সাথে কথা না বলে দৌড়াতে থাকেন। এখানে কোনো মারধর বা হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আমি এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত তদন্ত কমিটি করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মো. রকিব হাসান প্রান্ত/কেএইচকে/এমএস