ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

বহিরাগতদের দখলে ইবির মফিজ লেক

প্রকাশিত: ০৪:৩৫ এএম, ২৯ আগস্ট ২০১৬

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন ও মনোমুগ্ধকর মফিজ লেক স্থানীয় কৃষক ও সন্ত্রাসীদের খপ্পরে পড়ে সৌন্দর্য হারাতে বসেছে।

প্রতি বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় চাষীরা পার্শ্ববর্তী মাঠ থেকে পাট কেটে শিক্ষার্থীদের প্রিয় মফিজ লেকে তা পচিয়ে আঁশ বের করে। পাটের পচা গন্ধে আড্ডার অন্যতম প্রিয় লেক হয়ে উঠেছে বিরক্তিকর স্থান। লেকের পানিতে পাট পঁচানোর ফলে জীব বৈচিত্র্যও চরম হুমকির মুখে পড়েছে।

সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ গাঁজা ও মাদকসেবন অবস্থায় বহিরাগতদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। কিন্তু এক সময়ের শিক্ষার্থীদের আড্ডার প্রিয় স্থানটি সৌন্দর্য হারিয়ে বহিরাগতদের চারণভূমিতে পরিণত হলেও উদাসীন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত এক সময়ে শিক্ষার্থীদের আড্ডায় মুখরিত মফিজ লেকটি জনমানব শূন্য। পানিতে ভাসছে সারি সারি পাটের জাগ। কয়েকজন কৃষক ব্যস্ত পাট থেকে আশঁ ছাড়ানোর কাজে। আবার লেকের পাড়েই শুকাতে দেয়া হয়েছে পাটকাঠি।

লেকের একটি বৃহৎ অংশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছে স্থানীয় এক মাছ চাষী। সেখানে ভাসছে শত শত মরা মাছ। মরা মাছ এবং পাটের পঁচা গন্ধে অতিষ্ঠ পার্শ্ববর্তী ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, বেগম খালেদা জিয়া হলের শিক্ষার্থীরা।

iu

এদিকে, এ গন্ধে পার্শ্ববর্তী রাস্তা দিয়ে চলাচল করাও দুরূহ হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাট পঁচানোর ফলে এবং মাছ চাষে সার-কীটনাশক ব্যবহারের ফলে লেকের পানি নষ্ট হয়ে জীব বৈচিত্র্য পড়েছে হুমকির মুখে। কয়েক বছর আগেও শীত মৌসুমে এ লেকটি হাজার হাজার অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত হয়ে উঠতো।

কিন্তু গত চার বছর থেকে এখানে অতিথি পাখির দেখা মিলছে না। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় লেক এলাকাটি ঘন জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। যার সুযোগ নিচ্ছে স্থানীয় সন্ত্রাসী ও মাদকসেবীরা। তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে শিক্ষার্থীদের আড্ডার কেন্দ্রস্থল। এমনকি মাঝে মাঝেই বহিরাগতদের হাতে শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও ঘটে।

লেকে ঘুরতে আসা ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিমুল, ফাহিমা, আইন বিভাগের আনিকা, সোহেল, রুমি বলেন, মুক্ত বাতাসে লেক পাড়ে আড্ডা দিতে এসে পঁচা দুর্গন্ধে বসার কোনো উপায় নেই। কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণের অভাবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান পরিণত হয়েছে ভয়ঙ্কর স্থান এবং দূষিত পরিবেশে। কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারিতে মনোরম লেকটি তার সৌন্দর্য ফিরে পেতে সক্ষম হবে বলে আশা করছি।

iu

বাংলা বিভাগের প্রিয়াঙ্কা সাহা, ইতিহাস বিভাগের রাসেল বলেন, ঝোপ-জঙ্গল পরিষ্কার করে আড্ডার জন্য স্থায়ী বসার ব্যবস্থা করে দিলে বহিরাগতদের দখলে থাকা ভয়ঙ্কর স্থানটি তাদের কবল থেকে মুক্ত হবে। এছাড়া স্থানটিকে পিকনিক স্পটে পরিণত করলে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয় কুষ্টিয়া অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেট শাখার কর্মকর্তা মোয়জ্জেম হোসেন বলেন, লেকটি সংস্কারের জন্য বারবার উদ্যোগ নিয়েও পারিপার্শ্বিক কারণে ব্যর্থ হয়েছি। কর্তৃপক্ষ লেকটি সংস্কারের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিনোদনের শ্রেষ্ঠ কেন্দ্রভূমিতে পরিণত করতে পারে।

এ বিষয়ে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হক স্বপন বলেন, লেকের বদ্ধ পানিতে পাট পচানোর ফলে বায়ু ও পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে জীব বৈচিত্র্যে। পানি নষ্ট হয়ে জলজ প্রাণি হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।  

এসএস/এমএস

আরও পড়ুন