ইউনেস্কোর ই-ডিএনএ গবেষণা অভিযানে শেকৃবির সহযোগিতা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৫টি ঐতিহ্যবাহী সামুদ্রিক স্থানে পানির পারিবেশিক ডিএনএ বা এনভায়রনমেন্টাল ডিএনএ (ই-ডিএনএ) বিশ্লেষণ ও গবেষণা করছে ইউনেস্কো। বাংলাদেশ থেকে এ গবেষণা পরিচালনা করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) একদল গবেষক।
ইউনেস্কোর এ গবেষণায় সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রমের জলাঞ্চল থেকে ই-ডিএনএ সংগ্রহ ও গবেষণা অভিযান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব ও তার দল।
বাংলাদেশ অংশের এ গবেষণা কার্যক্রমে সহায়তা করেছে বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর। গবেষক দলটি সুন্দরবনের পশ্চিম বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রমের বিভিন্ন নদী ও খাল থেকে ই-ডিএনএ এর নমুনা সংগ্রহ করেছে। উক্ত কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীসহ স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়। একই সঙ্গে নাগরিক বিজ্ঞানী (সিটিজেন সাইন্টিস্ট) হিসাবে অংশ নেয় সুন্দরবনের ভ্রমণ গাইড, নৌযানচালক ও জেলে।

আরও পড়ুন: দেশের তৃতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
এ গবেষণার মাধ্যমে সুন্দরবনের নোনা জলে কি কি প্রজাতির জলজ প্রাণী ও মাছ রয়েছে তা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে এ গবেষণাটি সুন্দরবনের জলাঞ্চলের জীব বৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণ ও সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন দলনেতা অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব।
অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী সামুদ্রিক অঞ্চলের জীব বৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব স্থানে সামুদ্রিক জীবের বিচরণের ধরণ জানতে পারিবেশিক ডিএনএ বা ই-ডিএনএ পর্যবেক্ষণ করছে ইউনেস্কো। ই-ডিএনএ হচ্ছে একপ্রকার ডিএনএ নমুনা যেটি সরাসরি কোনো প্রাণীর দেহ থেকে সংগ্রহের পরিবর্তে বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক পরিবেশ যেমন- মাটি, নদীনালা বা সমুদ্রের জল, তুষার অথবা বায়ু থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এতে করে প্রাণীর কোনোরকম ক্ষতি না করে অথবা এর স্বাভাবিক বিচরণে বিঘ্ন না ঘটিয়ে সংগৃহীত ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণ করে কোনো নির্দিষ্টস্থানের প্রাণির অবস্থান ও জীব বৈচিত্র্যে সম্পর্কে জানা যায়। এটি একটি অত্যাধুনিক বায়োমলিকুলার পদ্ধতি। আশা করা যাচ্ছে যে সুন্দরবনের লবণাক্ত জলে ইউনেস্কোর সহায়তায় শেকৃবি কর্তৃক পরিচালিত এ গবেষণা কার্যক্রমটি বাংলাদেশে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জীববৈচিত্র্য নিয়ে নতুন গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত করবে।

আরও পড়ুন: কৃষি উদ্যোক্তার খোঁজে ‘এগ্রিবিজ’ প্রতিযোগিতা
সুন্দরবনের বাংলাদেশ অঞ্চলে তিনটি বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রম রয়েছে যা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে ইউনেস্কো স্বীকৃত দিয়েছে।
তাসনিম আহমেদ তানিম/জেএস/জিকেএস