দ্বীপরাজের তেল ছড়িয়ে পড়ছে কীর্তনখোলায়
বরিশাল থেকে দেড় হাজার যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে কীর্তনখোলা নদী ছেড়ে চরের ধানক্ষেতে উঠে যাওয়া এমভি দ্বীপরাজ লঞ্চের পেছনের অংশ জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।
এ কারণে লঞ্চের জ্বালানির জন্য মওজুদ রাখা তেল ছড়িয়ে পড়ছে কীর্তনখোলা নদীতে।
শনিবার সকালে জোয়ারের পানিতে লঞ্চের পেছনের অংশ নিমজ্জিত হয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, লঞ্চের সামনের অংশ চরের ওপর থাকলেও পেছনের অংশ নদীতে থেকে যায়। সকালে জোয়ারের পানিতে লঞ্চের পেছনের অংশে পানি উঠে যায়। লঞ্চের ইঞ্জিন রুমসহ পেছনের অংশ তলিয়ে যাওয়ায় ব্যবহারের জন্য মজুদ রাখা জ্বালানি তেল ছড়িয়ে পড়েছে দুর্ঘটনাস্থলের আশেপাশে নদীর পানিতে। এতে নদীর পানি দুষিত হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়রা পড়েছেন সমস্যায়।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক সুকুমার রায় জানান, বিষয়টি আমরা শনিবার বিকেলে জানতে পেরে তাৎক্ষণিক একজন কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি । তিনি পানির নমূনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসবে।
এছাড়া যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সেখানে লোকবল পাঠানো হয়েছে।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল বাশার মজুমদার জানিয়েছেন, তারা সকল যাত্রীকে নিরাপদে লঞ্চ থেকে নামিয়ে গন্তব্যে পাঠাতে সহায়তায় করেছেন। অনেককে রাতে তাদের বন্দর ভবনে রাত্রী যাপনেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র সার্ভে জাহাজ অগ্রনীর বার্দিং মাস্টার জসিম মোল্লা বলেন, তাদের একটি দল জাহাজ দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অবস্থা বুঝে সর্বশক্তি নিয়োগ করে লঞ্চটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
দীপরাজ লঞ্চের বরিশাল অফিসের ব্যবস্থাপক নিয়াজ মোর্শেদ অভিযোগ করেন, লঞ্চের মাস্টার মো. আক্তারুজ্জামানের অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মাস্টার প্রায়ই অন্য লঞ্চের সঙ্গে আগে যাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। এ নিয়ে ঘটনার দিন শুক্রবার সকালে তাকে বকাঝকা করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাস্টার ইচ্ছে করেই লঞ্চটি তীরে উঠিয়ে দিয়েছেন।
বর্তমানে দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চের কাছে অবস্থানরত কর্মচারী মো. রিয়াজ জানান, জোয়ারের পানি লঞ্চের তলা ও ডেকে প্রবেশ করায় লঞ্চটি বর্তমানে একটু ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এতে ইঞ্জিনরুমে পানি প্রবেশ করে নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ছে। তাই প্রথমে পানি অপসারণের চেষ্টা করা হবে।
তিনি আরো জানান, বিআইডব্লিটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ চলছে। প্রকৌশল বিভাগ ঘটনাস্থলে এসে যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী কাজ করা হবে।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. শাহজল হক জানান, লঞ্চটি এখন যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। ভেতরে যাত্রী না থাকায় ধীরে সুস্থে লঞ্চটি উদ্ধারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এটি উদ্ধার করতে বরিশালে থাকা উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভিক ছাড়াও অপর উদ্ধারকারী জাহাজ দুর্বার যেটি রামপালে আছে, সেটি এনে দুটি দিয়ে একসঙ্গে চেষ্টা করা হবে। এর বাইরেও লঞ্চ মালিককে বেসরকারি ব্যবস্থপনায় লঞ্চ উদ্ধারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে, তাতে খরচ কম পড়বে। লঞ্চটি দ্রুত উদ্ধারের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।
বরিশাল থেকে শুক্রবার রাত পৌঁনে ৯টায় প্রায় দেড় হাজার যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ৯টার দিকে এমভি দ্বীপরাজ লঞ্চটি নগরীর অদূরে চরআবদানী এলাকায় চরে ধান ক্ষেতে উঠিয়ে দেয়। এতে প্রচণ্ড ঝাকুনীর সৃষ্টি হলে লঞ্চে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তবে এতে বড় ধরণের কোন হতাহত হয়নি।
সর্বশেষ - দেশজুড়ে
- ১ চেক জালিয়াতি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত বিএনপি নেতা গ্রেফতার
- ২ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়লো বিআইডব্লিউটিএ’র গোডাউন
- ৩ রেললাইনে আগুন দিয়ে ৫ ঘণ্টা অবরোধ বিএনপি নেতাকর্মীদের, চরম দুর্ভোগ
- ৪ স্বামীকে হত্যাসহ ১০ মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেত্রী গ্রেফতার
- ৫ ফিটনেস-অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়া সেন্টমার্টিনে যাবে না জাহাজ