ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

অন্ধ হয়েও দেখতে পান আবুল বাশার

প্রকাশিত: ০২:৫৬ এএম, ০৫ জুন ২০১৬

দীর্ঘ ৩৩ বছর পৃথিবীর আলো দেখতে পান না তিনি। কিন্তু তার কার্যকালাপ দেখে কেউ চিন্তাও করতে পারবে না তিনি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। বিস্ময়কর এই মানুষটির নাম আবুল বাশার। বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া মধ্যপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আবু তালেব বিশ্বাসের ছেলে।

আবুল বাশার তালগাছ থেকে রস সংগ্রহ ও নারকেল গাছ থেকে নারকেল পেড়ে নিয়ে আসেন অনায়াসে। এমনকি জাল দিয়ে মাছও ধরতে পারেন নৈপুণ্যের সঙ্গে।

Magura

আবুল বাশারের প্রতিবেশী ইয়াকুব মন্ডল জাগো নিউজকে জানান, কোমরে ৪-৫টি মাটির হাড়ি ঝুলিয়ে অনায়াসে বড় বড় তালগাছ, নারকেল গাছ বেয়ে উঠতে পারে আবুল বাশার। তিনি দশটি তালগাছ থেকে প্রতিদিন দু’বেলা রস সংগ্রহ করেন। দ্রুত নারকেল গাছে উঠে নারকেল পেড়ে আবার ফিরে আসছেন।

বর্তমানে গ্রামের মানুষের নারকেল গাছ পরিষ্কার ও নারকেল পাড়ার কাজ করে তিনি অর্থ উপার্জন করছেন। সেই সঙ্গে স্যালো ইঞ্জিন মেরামত, নলকূপ মেরামত, খাল-বিল থেকে জাল দিয়ে মাছ ধরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে স্বাচ্ছন্দে জীবিকা নির্বাহ করছেন আবুল বাশার।

Magura

আবুল বাশারের মা খাদিজা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, আড়াই বছর বয়সে পানিতে পড়ে যান আবুল বাশার। এরপর থেকে বাশার রাতে চোখে দেখতেন না। কিছুদিন পর তিনি সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যায়। তবে অন্ধ হলেও শারীরিকভাবে সে সম্পূর্ণ সুস্থ। চোখে না দেখলেও দৈনন্দিন কাজকর্ম করেন স্বাভাবিক মানুষের মতোই।

আবুল বাশার জাগো নিউজকে জানান, অন্ধ হলেও তিনি কারও দয়ার পাত্র হয়ে বাঁচতে চান না। তিনি নিজেই কিছু না কিছু করে অর্থ উপার্জন করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চান।

Magura

তিন বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে আবুল বাশার বড়। বসতবাড়ির চার শতক জমিই তার সম্বল। এখানে বাশার ও তার ভাই একত্রে বসবাস করেন। স্ত্রী নূর নাহার, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও মা খাদিজা বেগমকে নিয়ে তার সংসার।

Magura

বাশারের স্ত্রী খাদিজা বেগম জাগো নিউজকে জানান, ২৫ বছর আগে অন্ধ ব্যক্তির সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়। প্রথমে কোনো অবস্থাতেই তিনি বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। এক পর্যায়ে পরিবারের চাপে তিনি স্বামীর সংসারে আসেন। বর্তমানে তিনি তার স্বামীকে নিয়ে গর্ব করেন। সমাজের নানা প্রতিকূলতা শয্য করে তিনি অন্ধ হয়েও অন্যান্য সুস্থ মানুষের মতো সংসারের হাল ধরেছেন। এছাড়া সন্তানদেরও নিয়মিত স্কুলে পাঠাচ্ছেন।

এসএস/এমএস

আরও পড়ুন