দায়িত্ব ফিরে পেয়ে ফের দুর্নীতিতে জাড়ালেন ইউপি চেয়ারম্যান
কুড়িগ্রামে দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর হাইকোর্ট থেকে রায় নিয়ে এসে ফের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নাম আতাউর রহমান মিন্টু। তিনি জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী সূত্র জানায়, ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদে 'ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট' (ভিজিডি) কর্মসূচির ৮৩৫ জন উপকারভোগী নির্বাচনের বরাদ্দ দেওয়া হয়। বড়ভিটা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডসহ কয়েকটি ওয়ার্ডে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ভিজিডি কার্ড বাবদ জনপ্রতি ৫০০০ টাকা করে নিয়েও নাম না থাকায় অভিযোগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগীরা।
তাদের অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু অর্থের বিনিময়ে সচ্ছলদের তালিকাভুক্ত করাসহ প্রকৃত দুস্থদের নাম অনলাইনে অন্তর্ভুক্তিকালে ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য না দিয়ে আবেদন বাতিল করেন। বিষয়টি নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগী আয়শা, নুরনাহার ও আছপি বেগম জানান, আমরা অনলাইনে আবেদন করেছি। কিন্তু আবেদনের পর আমাদের চেয়ারম্যান মিন্টু আমাদের কাছে পাঁচ হাজার টাকা করে নাম টেকানোর জন্য দাবি করে। ধার দেনা করে তার দাবি পূরণ করি। এখন দেখি চূড়ান্ত তালিকায় আমাদের নাম নেই।
বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য জান্নাতি খাতুন আলো জানান, চেয়ারম্যান সাহেব কয়েক মাস আগে দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হন। এরপর আমাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ভিজিডি কার্ড অসহায় ও গরীব মানুষ যাতে পায় সেজন্য সব সদস্যদের নিয়ে মিটিং করি। লটারির মাধ্যমে মিটিংয়ে দুই একজন মেম্বার ছাড়া সব লটারির মাধ্যমে সুবিধাভোগীর নাম নির্ধারণ করতে একমত পোষণ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সম্মতি প্রদান করেন। কিন্তু হঠাৎ চেয়ারম্যান সাহেব আবারও দায়িত্ব পাওয়ার পর সময় স্বল্পতা দেখিয়ে অগ্রাধিকার তালিকা দ্রুত পাঠানো হয়। টাকা লেনদেনের বিষয়টি আমিও বিভিন্ন ভাবে শুনেছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালিকা সুবিধাভোগী নির্বাচন করা হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোকনুজ্জামান মানু/আরএইচ/জিকেএস