শুয়ে-বসে দিন কাটে দেশের একমাত্র লাইগারের
দেশে একটিমাত্র লাইগার রয়েছে খুলনা ক্যান্টনমেন্টের বন বিলাস চিড়িয়াখানায়। ছবি-জাগো নিউজ
চেহারায় সিংহ ও বাঘের ছাপ। তবে পুরোপুরি বাঘ বা সিংহ নয়। দেখে বেশ শান্তই মনে হলো। খাঁচায় একা একা পায়চারী করছে। কখনো একটু ক্লান্ত মনে হলে শুয়ে-বসে জিরিয়ে নিচ্ছে। তবে মাঝে মধ্যে রাগ উঠলে জোড়ে গর্জন দিয়ে ওঠছে সে।
সম্প্রতি খুলনা ক্যান্টনমেন্টের বন বিলাস চিড়িয়াখানায় এমনই দৃশ্য দেখা গেলো। বিশেষ এই প্রাণীটির নাম ‘লাইগার’। দেশে এই একটিমাত্র লাইগার রয়েছে। এটি রাখা হয়েছে খুলনা ক্যান্টনমেন্টের বন বিলাস চিড়িয়াখানায়।

চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা যায়, লাইগার হলো পুরুষ সিংহ (Lion) ও স্ত্রী বাঘের (Tiger) সংকরায়ণে জন্ম নেওয়া বিশেষ এক প্রাণী। ইংরেজি লায়নের ‘লাই’ ও টাইগারের শেষের অংশ ‘গার’ মিলে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘লাইগার’।
“লাইগার হলো পুরুষ সিংহ (Lion) ও স্ত্রী বাঘের (Tiger) সংকরায়ণে জন্ম নেওয়া বিশেষ এক প্রাণী। ইংরেজি লায়নের ‘লাই’ ও টাইগারের শেষের অংশ ‘গার’ মিলে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘লাইগার’।”
দুর্লভ প্রাণীটি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে পাচারকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করে বিজিবি। উদ্ধারের সময় এটি মাত্র কয়েক মাসের একটি অসুস্থ শাবক ছিল।

পরে খুলনার বন বিলাস চিড়িয়াখানায় রেখে চিকিৎসা ও পরিচর্যার মাধ্যমে সুস্থ করা হয়। এখন তার বয়স ছয় বছর। গরুর মাংস খাওয়ায় সে অভ্যস্ত। প্রতিদিন লাইগারের ৫-৮ কেজি মাংস প্রয়োজন হয়। এর ওজন আনুমানিক ২০০-২২০ কেজি।
- আরও পড়ুন:
- জলবায়ু পরিবর্তন ও খাদ্য সংকটে হুমকিতে সুন্দরবনের বাঘ
- মিরসরাইয়ে লোকালয়ে চিতাবাঘসদৃশ প্রাণী, গ্রামজুড়ে আতঙ্ক
- হাড় ভেঙেছে সাপের, এক্স-রে করে চলছে চিকিৎসা
- তালগাছ কেটে শতাধিক বাবুই পাখির ছানা হত্যায় দুই মামলা
- ঢাকায় রাসেলস ভাইপার উদ্ধার
লাইগারকে দেখতে আসা শাফিন ইসলাম জানান, ফেসবুকে তিনি কয়েকদিন ধরে লাইগারের ছবি দেখেছেন। এখন সরাসরি লাইগারকে দেখে তার খুব ভালো লাগছে।
‘লাইগারের জন্য প্রতিদিন হাড়বিহীন মাংস কিনে আনা হয়। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে তাকে খাবার দেওয়া হয়। প্রতিদিন সকালে বাসস্থান পরিষ্কার করা হয়, যাতে লাইগার কোনো অস্বস্তি অনুভব না করে।’
চিড়িয়াখানায় আসা রিতু খন্দকার বলেন, ‘লাইগার খাঁচার মধ্যে চুপ হয়ে বসে আছে। মনে হয় তার দৌড়াতে ইচ্ছা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে হা করে শ্বাস নিচ্ছে। আবার গর্জনও করছে। ওকে দেখে ভালো লাগলেও আবার খাঁচায় বন্দি দেখে একটু খারাপও লাগছে।’

চিড়িয়াখানায় আসা জুম্মান ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুধু লাইগারকেই দেখতে এসেছি। বাঘ দেখলে ভয় লাগে কিন্তু লাইগারকে দেখে ভয় লাগলো না। অনেক শান্ত স্বভাবের লাইগার।’
বন বিলাস চিড়িয়াখানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার জাকিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, লাইগার উদ্ধারের পর থেকে আমাদের এখানেই আছে। সে খুব শান্ত স্বভাবের।

তিনি আরও বলেন, লাইগারের জন্য প্রতিদিন হাড়বিহীন মাংস কিনে আনা হয়। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে তাকে খাবার দেওয়া হয়। প্রতিদিন সকালে বাসস্থান পরিষ্কার করা হয়, যাতে লাইগার কোনো অস্বস্তি অনুভব না করে।
এসআর/এএসএম