ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বাঁশের সাঁকো বেয়ে উঠতে হয় ব্রিজে, দুর্ভোগে ২০ হাজার মানুষ

জেলা প্রতিনিধি | গাইবান্ধা | প্রকাশিত: ১০:৫০ এএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না ৩৪ লাখ টাকার ব্রিজ। ফলে বাঁশের সাঁকোই ভরসা হয়ে উঠছে নয় গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষের। প্রকল্পের মেয়াদ শেষের সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় বছরের পর বছর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া খালের ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের ব্রিজটি নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের জুনে। কিন্তু বাস্তবে ব্রিজ নির্মাণ শেষ হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে। তবে এখনো নির্মাণ হয়নি ব্রিজের সংযোগ সড়ক।

অভিযোগ উঠেছে, টেন্ডারে কাজ পেলেও প্রকৃতপক্ষে আইকন কনট্রাকশনের পরিবর্তে স্থানীয় ঠিকাদার গোলাম মওলাই কাজটি সম্পন্ন করেন। কিন্তু সংযোগ সড়ক না করে প্রকল্প গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রিজটি দাঁড়িয়ে থাকলেও দুই প্রান্তে গভীর গর্ত থাকায় এটি ব্যবহার হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো বসিয়ে অস্থায়ী পথ তৈরি করেছেন। কিন্তু সেটিও এখন নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। যানবাহন তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটেও পারাপার কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিদিন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

ঘগোয়া গ্রামের ব্যবসায়ী মশিউর রহমান বলেন, ‘তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। সে অভিযোগ এলাকাবাসী করেছিলেন। এখন সংযোগ সড়ক না থাকায় এটি কোনো কাজে আসছে না।’

অমল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘মানুষের সুবিধার বদলে ব্রিজটি এখন দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোতে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে।’

বাঁশের সাঁকো বেয়ে উঠতে হয় ব্রিজে, দুর্ভোগে ২০ হাজার মানুষ

স্কুলছাত্র রাফিউর রহমান জানায়, ‘পায়ে হেঁটে কোনোভাবে যাওয়া গেলেও যানবাহন চলাচল করতে পারে না। বাঁশের সাঁকো ভেঙে পড়ার ভয় নিয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হয়।’

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মজনু মিয়া বলেন, ‘সংযোগ সড়ক না থাকায় গ্রামবাসী মিলে বাঁশের সাঁকো বসিয়ে অস্থায়ী সংযোগ দিয়েছে। বহুবার বলার পরও ঠিকাদার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

তারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ব্রিজ নির্মাণ শেষে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি। মানুষের দুর্ভোগের জন্য ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের অবহেলাই দায়ী। দ্রুত বিষয়টি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো।’

এ বিষয়ে আইকন কনট্রাকশনের প্রোপ্রাইটর শামীম বলেন, ‘কাজটি মূলত পার্টনার হিসেবে গোলাম মওলা করেছেন। সংযোগ সড়ক হয়নি বিষয়টি সম্প্রতি জেনেছি। দ্রুত মাটি দিয়ে সংযোগ তৈরি করা হবে।'

তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মশিয়ার রহমানের সঙ্গে তার অফিসে কথা বলতে চাইলে তিনি প্রথমে ব্রিজ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে বলেন- আপনারা ইউএনওর কাছ থেকে বক্তব্য নিন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আনোয়ার আল শামীম/আরএইচ/জেআইএম