ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

দুদকের অভিযান

বেনাপোল কাস্টমসে ঘুষের টাকাসহ রাজস্ব কর্মকর্তার সহযোগী আটক

উপজেলা প্রতিনিধি | বেনাপোল (যশোর) | প্রকাশিত: ০৯:২৩ এএম, ০৭ অক্টোবর ২০২৫

যশোরের বেনাপোল কাস্টমস হাউসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসময় ঘুষের প্রায় ৩ লাখ টাকাসহ এক নারী রাজস্ব কর্মকর্তার সহযোগীকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে এ অভিযান চালায় সংস্থাটি।

জানা গেছে, আটক হাসিবুর রহমান বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ৬ নম্বর শুল্কায়ন গ্রুপের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের ঘুষের টাকা আদায়কারী (স্থানীয় ভাষায় এনজিও) হাসিবুর দুদকের কাছে এ টাকা রাজস্ব কর্মকর্তার বলে স্বীকার করলেও দুদক ওই রাজস্ব কর্মকর্তাকে আটক করা হয়নি। এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

যশোর জেলা দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত একটি টিম বেনাপোল কাস্টমস হাউসে প্রবেশ করে রাজস্ব শাখা, মূল্যায়ন শাখা ও প্রশাসনিক দপ্তরসহ বিভিন্ন কক্ষে ঘুরে তল্লাশি চালায়। এসময় ৬ নম্বর শুল্কায়ন শাখা থেকে ঘুষ লেনদেনের প্রায় ৩ লাখ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।

যশোর দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দীন আহমেদ জানান, আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল, কাস্টমস হাউসে ঘুষ বাণিজ্য চলছে ও মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হচ্ছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালাই। ঘটনাস্থল থেকেই ঘুষের টাকাসহ হাসিবুর রহমান নামে একজনকে আটক করা হয়। পরে অভিযুক্ত হাসিবুর রহমান স্বীকার করেন এই টাকা ৬ নম্বর শুল্কায়ন গ্রুপের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল।

তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে রাজস্ব কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনিও বিষয়টি স্বীকার করেন। অধিক তদন্তের স্বার্থে আমরা সহযোগী হাসিবুরকে আটক করেছি। তদন্তের পর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা ধরে কাস্টমস হাউজের মধ্যে এক কর্মকর্তার রুমে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুধু রাজস্ব কর্মকর্তার সহযোগীকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বিষয়টি জানতে গেলে তাদের সঙ্গে বাজে আচরণ করেন দুদকের কর্মকর্তারা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত রাজস্ব কর্মকর্তাকে আটক না করা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে বাজে আচরণের প্রতিবাদে সংবাদকর্মীরা দুদকের গাড়ি অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে রাত ৯টার দিকে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে নিরাপদে যশোর পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বেনাপোল কাস্টমসে দীর্ঘদিন ধরে ঘুষ ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। দুদকের এই অভিযানকে তারা স্বাগত জানান। তবে মূল অভিযুক্ত রাজস্ব কর্মকর্তাকে আটক না করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বেনাপোল কাস্টমস হাউস দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর। প্রতিদিন এখানে কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। তবে নানা সময় দুর্নীতির অভিযোগে আলোচনায় আসে এই বন্দরটি।

এ বিষয়ে কাস্টমসের কোন কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হয়নি।

জানা যায়, আটক হাসিবুর দীর্ঘদিন ধরে কাস্টমসের ৬ নম্বর শুল্কায়ন গ্রুপের কর্মকর্তাদের ঘুষের টাকা আদায় করেন। ঘুষের টাকা আদায়কারীদের স্থানীয় ভাষায় এনজিও বলা হয়। তাদের অত্যাচারে সাধারণ ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ ছিল। নতুন কাস্টম কমিশনার খালেদ মোহাম্মাদ আবু হোসেন গত জুলাই মাসের শেষের দিকে বেনাপোলে যোগদান করেন। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তিনি কাস্টমস হাউসের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের পাশে থাকা ১৪০ জন এনজিওদের কাস্টমস হাউজ থেকে বের করে দেন। তবে তারা বের হলেও বাইরে থেকে ঘুষের টাকা সংগ্রহ করতো। এসব এনজিওরা অল্পদিনে কোটি টাকার মালিক বনে যান।

মো. জামাল হোসেন/এমএন/এএসএম