কুষ্টিয়ায় স্ত্রীর নারী নির্যাতন মামলায় ইউপি সচিব গ্রেফতার
মো. জাহিদ হাসান
কুষ্টিয়ার খোকসায় স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন মামলায় গোপগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. জাহিদ হাসানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) আমবাড়িয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি একই গ্রামের আব্দুস সোবাহানের ছেলে। তার স্ত্রী মোছা. ঝুমুর খাতুন তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে খোকসা থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খোকসা থানা পুলিশের এসআই মো. রাজু বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় গ্রেফতার ইউপি সচিব জাহিদ হাসানকে আদালত জেল হাজতে পাঠিয়েছে। জাহিদ গোপগ্রাম ইউনিয়নের পরিষদের সচিব পদে কর্মরত আছেন।
মামলার এজাহার ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকে জাহিদ হাসান তার স্ত্রী ঝুমুর খাতুনের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) স্বামীর পরকীয়ার বিষয়ে কথা বললে দুই সন্তানের মা ঝুমুরকে মারধর করেন জাহিদ। একপর্যাযে ঝুমুর জ্ঞান হারালে তাকে সন্তানসহ ঘরে আটকে রেখে চলে যান। কয়েক ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরলে পরিবারের লোকদের তিনি ফোনে ঘটনা জানান। তারা এসে ঝুমুরকে উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করান।
পরে ঝুমুর খাতুন বাদী হয়ে খোকসা থানায় মামলা করেন। মামলার পর জাহিদ হাসনকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বাদিনীর ৮ ও ৫ বছর বয়সি দুটি শিশু কন্যা সন্তানের ওপর নির্যাতন করেন জাহিদ হাসান। দুই মেয়ে ও তার নিজের নিরাপত্তার অভাবের কথা বলা হয় এজাহারে।
ভুক্তভোগীর ভাই আবু তাহের জানান, দশ বছর আগে পারিবারিকভাবে জাহিদ হাসানের সঙ্গে তার বোন ঝুমুরের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ঝুমুরের ওপর জাহিদ হাসান অমানবিক নির্যাতন করে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার পারিবারিকভাবে সালিশ বৈঠক হয়েছে। কয়েক দফায় নগদ টাকাসহ টেলিভিশন ফ্রিজ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ইউনিয়ন পরিষদের চাকরির সুবাদে জাহিদ অন্য নারীতে আসক্ত। পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে প্রতিবাদ করায় ঝুমুরের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেছে। ঝুমুর অসুস্থ থাকায় কারো সঙ্গে কথা বলতে পারছেন না।
অভিযুক্ত জাহিদের বাবা আব্দুস সোবাহানের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাজু জানান, মামলার রেকর্ডের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একমাত্র আসামিকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
আল-মামুন সাগর/এমএন/এমএস