শেরপুরে কৃষি কর্মকর্তাকে চড় মারার অভিযোগ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার রুমের সিসিটিভির ফুটেজ ও ছাত্রদল নেতা
সরকারি কৃষি প্রণোদনার ভাগ না পাওয়ায় শেরপুরের নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সরকারি অফিস কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। পরে রাতই কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনাটির সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা হলেন- উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুম। তিনি নকলা পৌরসভার ধুকুরিয়া গ্রামের সুরুজ মোল্লার ছেলে।
জানা গেছে, মারধরের সময় কাইয়ুমের সঙ্গে ছাত্রদলকর্মী ফজলু (৩২) ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন। এ ঘটনায় কাইয়ুম ও ফজলুর বিরুদ্ধে নকলা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ফজলু ধুকুরিয়া গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে।
কৃষি অফিস ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীর অফিস কক্ষে যান রাহাত হাসান কাইয়ুম। এ সময় বাইরে অপেক্ষা করছিলেন ছাত্রদলকর্মী ফজলু। কাইয়ুম কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীর কাছে কৃষি প্রণোদনা কাকে দেওয়া হয়েছে জানতে চান এবং ছাত্রদলের ভাগ তাকে দিতে বলেন। বিষয়টি মোবাইলে উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খোরশেদুর রহমানকে জানালে কাইয়ুম আরও ক্ষিপ্ত হন এবং কথা বলার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে চড় মারেন। পরে তাকে টেনেহিঁচড়ে কক্ষের বাইরে নিয়ে ফজলু ও কাইয়ুম মারতে থাকলে আশপাশের লোকজন গিয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেন।
কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদী বলেন, ছাত্রদল নেতা রাহাত হাসান কাইয়ুম ও ফজলু আমার সরকারি অফিসে এসে আমি এখনো কেনো বদলি হচ্ছি না জিজ্ঞাসা করেন এবং প্রণোদনার ভাগ চান। বিষয়টি খোরশেদুর রহমানকে জানালে কাইয়ুম আরও ক্ষিপ্ত হয় এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খোরশেদুর রহমান বলেন, ওই কৃষি কর্মকর্তা প্রণোদনা নিয়ে তাকে চাপ দেওয়ার বিষয়টি আমাকে অবহিত করলে আমি ছাত্রদল নেতার চাচাতো ভাই যুবদল নেতা লোটাসকে জানাই। পরে লোটাস রাহাতকে মোবাইলে এ বিষয়ে জানালে রাহাত এর জেরেই এমন ঘটনা ঘটায়।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাইম হাসান উজ্জ্বল বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েছি। কর্মরত সরকারি অফিসারের গায়ে হাত তোলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনায় আমরা দলীয়ভাবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে, আইন অনুযায়ী তারা নিজেদের ব্যবস্থা নেবে। তবে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে রাহাত হাসান কাইয়ুমের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসেম সিদ্দিকী বাবু বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুমের মোবাইল নম্বরে বারবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মোবাইল বন্ধ করে রাহাত গাঢাকা দিয়েছেন।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কক্ষে ঢুকে মারধর ও হেনস্তার ঘটনায় দুজনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
মো. নাঈম ইসলাম/এনএইচআর/জিকেএস
সর্বশেষ - দেশজুড়ে
- ১ ফ্যাসিবাদী আমলে বন্ধ হওয়া চিনিকলগুলো পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছি
- ২ ৮০০ টাকা কেজি রান্না করা গরুর মাংস কিনতে ক্রেতাদের হিড়িক
- ৩ পুরোনো রাজনীতি পরিহার করে নতুন রাজনীতি করতে চাই: মঞ্জু
- ৪ ফ্যাসিবাদের আমলে ৫ টাকা চাঁদা দিলে এখন ২০ টাকা দেওয়া লাগে
- ৫ রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে ওয়ানশুটার গানসহ দুই পিস্তল উদ্ধার