ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নিষ্ক্রিয় মেহেরপুর বিসিকের পরিত্যক্ত প্লটে স্থবির শিল্পায়ন

আসিফ ইকবাল | প্রকাশিত: ১২:০৮ পিএম, ০৮ নভেম্বর ২০২৫

মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরীতে গত ১৯ বছরে মাত্র ৭টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। অথচ এখানে ৬৪টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার বেশিরভাগই এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

উদ্যোক্তারা বলছেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, গ্যাস সংযোগ না থাকা, সীমানা প্রাচীর ও নিরাপত্তার ঘাটতি, বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট স্থান না থাকা, দক্ষ জনবল ও ঋণ সুবিধার অভাবে শিল্পায়নের গতি থমকে আছে।

নিষ্ক্রিয় মেহেরপুর বিসিকের পরিত্যক্ত প্লটে স্থবির শিল্পায়ন

বিসিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে মেহেরপুরে বিসিকের কার্যক্রম শুরু হয়। তখন উদ্যোক্তা তৈরি, ঋণ বিতরণ এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু ছিল। পরে ২০০৬ সালে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের খড়ের মাঠ এলাকায় ১০ একর জমির ওপর বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতি শতক জমির দাম ছিল ২১ হাজার টাকা। ওই সময় ৭০টি প্লটের মধ্যে ৬৪টি প্লট ৩১ জন উদ্যোক্তার মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৪ সালে জমির মূল্য পাঁচ গুণ বাড়িয়ে ১ লাখ ৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলে নতুন উদ্যোক্তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

উদ্যোক্তারা বলছেন, মেহেরপুরের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে বিসিককে উদ্যোগী হতে হবে। গ্যাস সংযোগ ও অবকাঠামোগত সহায়তা দিতে হবে। না হলে এই শিল্পনগরী থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন
৪২ কোটি টাকার বিসিকে কারখানা চলে ৩টি, বাকি সব আগাছা 
কাজ অসমাপ্ত রেখেই প্লট হস্তান্তর, শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালু নিয়ে শঙ্কা 
ভাঙা প্রাচীর ও বেহাল ড্রেন-সড়কে খুঁড়িয়ে চলছে ঝিনাইদহ বিসিক 

প্লট মালিক অঞ্চল ভট্টাচার্য জানান, অধিকাংশ প্লটে এখনো কারখানা গড়ে ওঠেনি। বড় বড় ব্যবসায়ীরা প্লট নিয়ে ফেলে রেখেছেন। গ্যাস সংযোগ, ড্রেনেজ ও নিরাপত্তা না থাকায় আমরা কাজ শুরু করতে পারছি না। বারবার বিসিক অফিসে যাই, কিন্তু কাজের অগ্রগতি খুব ধীর।

আরেক উদ্যোক্তা মুজাহিদ বলেন, আমরা নিজের উদ্যোগে উৎপাদন শুরু করেছি, কিন্তু বাজার তৈরি না হওয়ায় টিকে থাকা কঠিন। বিসিকের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। ঋণ সুবিধা নিয়েও কোনো খবর নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে শিল্পনগরী করেছে, কিন্তু এটি এখন প্রায় পরিত্যক্ত। যদি প্রকল্পটি সঠিকভাবে চালু করা যেত, তাহলে শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হতো।

নিষ্ক্রিয় মেহেরপুর বিসিকের পরিত্যক্ত প্লটে স্থবির শিল্পায়ন

বাংলাদেশ জাতীয় ক্ষুদ্র কুটির শিল্প প্লট মালিক সমিতির মেহেরপুর জেলা সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম কালু বলেন, ক্ষুদ্র শিল্প বিকাশে বিসিকের সহযোগিতা প্রয়োজন, কিন্তু তারা কার্যত নিষ্ক্রিয়। ব্যাংকগুলোও এসএমই ঋণ দিতে আগ্রহী নয়। ফলে উদ্যোক্তারা বিপাকে পড়ছেন।

তবে মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক পার্থ সারথি সরকার বলেন, যেসব উদ্যোক্তা এখনো কাজ শুরু করেননি, তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কারখানা স্থাপন করতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি শিল্পনগরী ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু না করলে তাদের বরাদ্দ বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এফএ/জিকেএস