ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মমেক হাসপাতালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির সঙ্গে চিকিৎসকের তর্ক

জেলা প্রতিনিধি | ময়মনসিংহ | প্রকাশিত: ০৭:১৯ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মণ। আকস্মিক এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি হাসপাতালজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটির ১৪ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শিশুদের মূত্রাশয় ও প্রজননতন্ত্র সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসাবিষয়ক চলমান চিকিৎসার সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে একটি সেমিনারে মমেক হাসপাতালে প্রধান অতিথি হিসেবে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর। সেমিনারে অংশগ্রহণের আগে মহাপরিচালক হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে সেবার মান, জরুরি বিভাগ পরিচালনা, রোগী ব্যবস্থাপনা ও স্টাফদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এসময় ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মণ তার বিভাগের সীমাবদ্ধতা, জনবল সংকট ও দায়িত্ব পালনের চাপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে ডিজি ও তার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পরে ডা. ধনদেব বর্মনকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

এদিকে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে ক্যাজুয়ালটি পরিদর্শন করেন। সেখানের কক্ষে অপারেশন থিয়েটারের পাশে একটি টেবিল রাখা ছিল। টেবিলের ওপর চিকিৎসাসংক্রান্ত বিভিন্ন সামগ্রি ছিল। এসময় ওটিতে অন্যান্যের সঙ্গে ডা. ধনদেব বর্মণ ছিলেন। এখানে টেবিল কেন? ডা. ধনদেব বর্মণকে জিগ্যেস করেন মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর। টেবিলে লিখতে হয় বলে জানান ডা. ধনদেব বর্মণ।

মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, ‘রোগীর চাপ আছে, তাই বলে ওটির কক্ষ তো হাটবাজারের মতো হলে হবে না। লিখতে হয় মানে? কথাবার্তা ঠিক করে বলবেন? হো আর ইউ?’ ডা. ধনদেব বর্মণ বলেন, ‘আই এম ডা. ধনদেব বর্মণ।’ মহাপরিচালক বলেন, ‘ইটস ওকে। দ্যাট ইজ নট দ্য ম্যাটার।’ ডা. ধনদেব বর্মণ বলেন, ‘দ্যাট ইজ ম্যাটার।’ তখন মহাপরিচালক বলেন, ‘স্টপ, কন্ট্রোল ইওর মাউথ।’ এসময় ডা. ধনদেব বর্মণ বলেন, ‘কিসের স্টপ? ‘পুলিশি ল্যাংগুয়েজে (ভাষায়) কথা বলবেন না। আমাকে সাসপেন্ড করেন, নো প্রবলেম।’ মহাপরিচালক বলেন, ‘যারা ডিজির সাথে এরকম আচরণ করে, তারা রোগীর সাথে কী আচরণ করে?’ আবারও উত্তর দিয়ে ডা. ধনদেব বর্মণ বলেন, ‘আমি রোগীর সাথে অনেক ভালো আচরণ করি। কিন্তু যারা দ্বায়িত্বে আছে তাদের সাথে আমার ভালো আচরণ করার দরকার নেই। তিনদিন ট্রেনিং করলাম, আপনার (মহাপরিচালক) আসার কথা ছিল দুইদিন। আপনি একদিনও আসেননি।’ তখন মহাপরিচালককে বলেন, ‘সেটাতো অন্য কথা। তুমি এরকম কথা বলছো কেন?’

এসময় মহাপরিচালক ওই চিকিৎসককে বহিষ্কারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে যান।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, আমিও ঘটনাস্থলে ছিলাম। তবে বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ করেই অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনা ঘটে যায়। পরে একটি সভায় অংশগ্রহণ করেন মহাপরিচালক স্যার।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস বলেন, আমাদের সঙ্গে ডা. ধনদেব বর্মণ সবসময় লো ভয়েজে কথা বলেন। মহাপরিচালকের সঙ্গে কেন এরকমভাবে কথা বলেছেন বুঝতে পারছি না।

কামরুজ্জামান মিন্টু/এমএন