ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ফরিদপুর

স্থায়ী ব্রিজের পরিকল্পনা লালফিতায় বন্দি, ফের বেইলি ব্রিজ মেরামত

জেলা প্রতিনিধি | ফরিদপুর | প্রকাশিত: ১০:১৮ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

ফরিদপুর শহরের কুমার নদের ওপর অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ আলিমুজ্জামান বেইলি ব্রিজের স্থায়ী নির্মাণ পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরে ‌‘লালফিতায় বন্দি’ থাকায় ফের অস্থায়ী মেরামত কাজ শুরু হতে চলেছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে এই বেইলি ব্রিজ দিয়ে জনসাধারণের সব ধরনের চলাচল নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

জানা যায়, ৯১ মিটার দীর্ঘ এই বেইলী ব্রিজটি হাজী শরিয়াতুল্লাহ বাজারকে তিতুমীর বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। শহরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকা এই স্থানে একটি প্রশস্ত ও স্থায়ী সেতু নির্মাণ করার। কিন্তু কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা ও নকশা অনুমোদনের প্রক্রিয়া ফাইলবন্দি থাকায় শহরের এই গুরুত্বপূর্ণ পথের দুর্ভোগ লাঘব হচ্ছে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শহরের অন্যতম ব্যস্ততম পথে অবস্থিত এই বেইলি ব্রিজটি বর্তমানে এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে, এটিকে আবারও মেরামত করতে হচ্ছে। এর আগেও ২০১৩ সালে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি সংস্কার করা হয়েছিল, যা তৎকালীন এমপি ও মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন উদ্বোধন করেন। ২০২৩ সালের মার্চেও একবার ক্ষয়ে যাওয়া প্যানেল (পাটাতন) মেরামত করা হয়েছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুরুতে এটি কোনো বেইলি ব্রিজ নয় বরং পুরোদস্তুর ব্রিজ হিসেবেই নির্মিত হয়েছিল ১৯৩৫ সালে। তৎকালীন জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান চৌধুরী ব্রিজটি নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেন। শহরে কুমার নদের ওপর সর্বপ্রথম নির্মিত কোনো সেতু এটি। লোহার পিলারের ওপরে পাথরের ঢালাইয়ে নির্মিত সেতুটি ১৯৮৮ সালের প্রলয়ংকরী বন্যায় ধসে যায়। কয়েক বছর সাঁকো দিয়ে পারাপারের পরে সাময়িকভাবে শুধুমাত্র পায়ে হেঁটে চলাচলের সুবিধা নিয়ে তৈরি করা হয় বেইলী ব্রিজ। এরপর দীর্ঘকালেও ব্রিজটি আরও স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়নি। এ নিয়ে শহরবাসীর মাঝে অনেক আক্ষেপও রয়েছে।

jagonews24

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমার নদের ওপরে মুজিব সড়কে স্থাপিত ব্রিজটির এক পাশে ফরিদপুরের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র হাজি শরিয়তুল্লাহ বাজার এবং অন্য পাশে ময়রাপট্টি, নিউ মার্কেট ও তিতুমীর বাজার। ২০১২ সালের অক্টোবরের দিকে রাতের আঁধারে ট্রাকের ভারে ব্রিজটি ধসে যায়। এরপর ফরিদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সন্তোষ কুমার রায়ের সময়কালে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে মেরামত কাজ করা হয়।

শহরের বাসিন্দা দাউদ হোসেন বলেন, নতুন করে এই মেরামত কাজের মাধ্যমে ব্রিজটি প্রশস্ত করণের পরিকল্পনা কবে বাস্তবায়িত হবে তা নিয়েও সংশয় রয়েই গেলো।

আরেক বাসিন্দা মো. সুমন শেখ বলেন, ব্রিজটি স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা গেলে জনচলাচলের পাশাপাশি শহরের মধ্যে যানজট নিরসনেও বড় ভূমিকা রাখবে। এজন্য হাজরা তলা মোড় থেকে ইমাম উদ্দিন স্কয়ার পর্যন্ত সড়ক বিস্তৃত বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে এ কাজ বাস্তবায়ন করলে মানুষ উপকৃত হবে।

জানতে চাইলে ফরিদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার বলেন, বেইলি ব্রিজটির সংস্কার প্রয়োজন। এটি বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই সেতু ব্যবহার করেন। ইতোমধ্যে সেতুটি সংস্কারের পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শিগগিরি কাজ শুরু করা হবে। এছাড়াও এখানে একটি নতুন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে।


এন কে বি নয়ন/কেএইচকে