ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কেরু চিনিকলে মুনাফায় রেকর্ড, চিনিতে লোকসান

হুসাইন মালিক | চুয়াডাঙ্গা | প্রকাশিত: ০৫:১৫ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশের বেশিরভাগ চিনিকল যখন টিকে থাকার লড়াইয়ে দিশেহারা, তখন চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড প্রতিষ্ঠার পর সর্বোচ্চ নিট মুনাফা ঘোষণা করেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১২৯ কোটি ৪৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো বরাবরের মতো চিনি বিভাগে ক্ষতির পরিমাণ ৬২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নিট মুনাফার পরিমাণ ছিল ১১২ কোটি ৭ লাখ ৯১ হাজার টাকা

বরাবরই চিনিতে লোকসানের কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেরুতে ব্যবহৃত আখের অনেকটাই পুরোনো জাত। রিকভারি রেট কম হওয়ায় একটানা আখ মাড়াই করলে উৎপাদন খরচ বাড়ে। আখ চাষে লাভ-ক্ষতির অনিশ্চয়তা, সময়মতো দাম না পাওয়া এবং সেচ ও খরচ বাড়ায় আখ চাষ হ্রাস পেয়েছে। ফলে মিলে পর্যাপ্ত ও গুণগত আখ আসছে না। আমদানি করা চিনির তুলনায় কেরুর চিনির দাম কম। এ কারণেও লাভের মুখ দেখছে না কোম্পানি।

কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাব্বিক হাসান বলেন, ‘আমরা ২০২৪-২৫ সালে রেকর্ড মুনাফা করলেও সেটার মূল চালিকা শক্তি ছিল ডিস্টিলারি (মদ উৎপাদন বিভাগ)। চিনি বিভাগ বহু বছরের সমস্যা বহন করছে। রিকভারি রেট কম, আখের গুণগত মান নিচু এবং কারখানার কিছু পর্যায়ের যন্ত্রপাতি পুরোনো। কেরুর আধুনিকতার জন্য আমাদের ১০২ কোটি ২১ লাখ টাকার আধুনিকায়ন প্রকল্পের (বিএমআরআই) কাজ চলমান। কাজও প্রায় শেষের দিকে। নতুন কারখানা অটোমেটিক পদ্ধতিতে চালু হলে চিনি বিভাগের লোকসান কমবে বলে আশা করি।’

আরও পড়ুন:
চিনিতে লোকসান, মদ বেচে ১৯০ কোটি টাকা মুনাফা কেরুর

৫ ডিসেম্বর আখ মাড়াই মৌসুম উদ্বোধনের দিনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ চিনি খাদ্য করপোরেশনের চেয়ারম্যান রশিদুল হাসান বলেছিলেন, চিনিকল পুনরুজ্জীবনের জন্য আমরা টেকনোলজি ও উচ্চফলনশীল আখের জাত নিয়ে কাজ করছি। কেরুর আধুনিকায়নের কাজ সম্পন্ন হলে লোকসান কমবে।

কেরু চিনিকলে মুনাফায় রেকর্ড, চিনিতে লোকসান

ওইদিন শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, কেরু অ্যান্ড কোম্পানির এখন মূল চ্যালেঞ্জ চিনি বিভাগকে লাভে আনা। এই লক্ষ্যে সরকার প্রয়োজনীয় সব কাজ করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে মনিরুজ্জামান নামের একজন আখ চাষির ভাষ্য, শুধু কারখানাই আধুনিকায়ন নয়, মাঠে আধুনিক বীজ ও সার সরবরাহের মাধ্যমে উচ্চ চিনিসমৃদ্ধ আখের চাষ বাড়াতে হবে।

চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ছয়টি বিভাগের মধ্যে পাঁচটিতে লাভের মুখ দেখেছে কেরু। সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে ডিস্টিলারি (মদ) বিভাগ থেকে। শুধু এখান থেকেই আয় হয়েছে ১৯০ কোটি ২৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এছাড়া জৈবসার কারখানা থেকে ৭৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, বাণিজ্যিক খামার থেকে ৩৬ লাখ ৯ হাজার টাকা, পরীক্ষামূলক খামার থেকে ৩০ লাখ দুই হাজার টাকা এবং ফার্মাসিউটিক্যালস বিভাগ থেকে পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।

চিনি বিভাগে লোকসান হয়েছে ৬২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সরকারকে রাজস্ব দেওয়া হয়েছে ১৪০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সব বাদেও কেরুর নিট লাভ ১২৯ কোটি ৪৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকা, যা প্রতিষ্ঠার পর সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মুনাফা ছিল ১১২ কোটি সাত লাখ ৯১ হাজার টাকা। রাজস্ব দেওয়া হয়েছিল ১৪০ কোটি টাকা।

এসআর/এএসএম