ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মাগুরার ছাই যাচ্ছে চীনে

মোঃ মিনারুল ইসলাম জুয়েল | মাগুরা | প্রকাশিত: ০৭:২০ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

‘যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখ তাই/ পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন’—প্রবাদটির অর্থ ‘তুচ্ছ জিনিসের মধ্যেও মূল্যবান কিছু লুকানো থাকতে পারে। তাই সবকিছু পরীক্ষা করে দেখা উচিত। তবে সব ছাই উড়িয়ে দেখার দরকার নেই। একটু প্রক্রিয়াজাত করে পাঠালেই মিলবে টাকা।

শুনতে অবাক লাগলেও ছাই এখন রপ্তানি হচ্ছে চীনে। এতে অর্জন হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। মাগুরায় তিনটি ছাই কারখানা রয়েছে, যেখান থেকে ছাই রপ্তানি হচ্ছে চীনে।

মাগুরা সদর উপজেলার নাকোল ইউনিয়নের (নাকোল কদমতলা) ছাই কারখানায় পাটকাঠি পুড়ি তৈরি হচ্ছে ছাই। আর সেই ছাই থেকে তৈরি হচ্ছে ফটোকপি মেশিনের কালি, প্রিন্টারের কালি এবং কলমের কালি। কারখানাটিতে ১০০ জন নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

মাগুরার ছাই যাচ্ছে চীনে

কথা হয় নাকোল কদমতলায় অবস্থিত ছাই কারখানার কর্মচারী জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘জেলায় ছাই কারখানা হওয়ায় আমাদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা হয়েছে। এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে মোটামুটি সংসার চলে যায়। আমার মতো অনেকেই এই কারখানায় কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।’

কারখানায় পাটকাঠি সরবরাহ করেন ওবায়দুল রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি নিয়মিত কারখানায় পাটকাঠি সরবরাহ করি। এই পাটকাঠি পুড়িয়ে প্রথমে ছাই করা হয়। পরে এসব ছাই প্যাকেটজাত করে পাঠানো হয় বিদেশে।’

স্থানীয়র মো. আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিদেশে ছাইয়ের যে কদর রয়েছে তা জানা ছিল না। এখন দেখছি কোনো কিছুই ফেলনা নয়।’

মাগুরার ছাই যাচ্ছে চীনে

ছাই কারখানার ম্যানেজার মো. মামুন বলেন, আমাদের কারখানায় ১০০ শ্রমিক কাজ করেন। এই কারখানার সঙ্গে বিভিন্নভাবে পাঁচ শতাধিক মানুষ জড়িত।

তিনি আরও বলেন, এই ছাই চীনে রপ্তানি করা হয়। সেখানে প্রক্রিয়াজাত করে ৮-১০ প্রকারের কালি তৈরি হচ্ছে। ফটোকপি মেশিনের কালি, প্রিন্টারের কালি, কার্বন, কলমের কালি তৈরি হয় ছাদ থেকে।

ম্যানেজার মামুন বলেন, ‘মাগুরা নাকোল কদমতলা ছাই কারখানা থেকে প্রতিমাসে ৫০০-৭০০ বস্তা ছাই রপ্তানি করা হয়। একেকটি বস্তার ওজন ১৫ কেজি। বস্তাপ্রতি দাম পাওয়া যায় ৭০০-৭৫০ টাকা। মাসে ৪-৫ লাখ টাকার ছাই রপ্তানি করা হয়।’

মাগুরার ছাই যাচ্ছে চীনে

পরিবেশ অধিদপ্তর মাগুরার সহকারী পরিচালক সোয়াইব মো. সোহেল জাগো নিউজকে বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনে মাগুরার ছাই কারখানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। আমি মনে করি, এই ছাই কারখানা একসময় মাগুরার জন্য আর্শীবাদ হয়ে উঠবে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানটি সরকারি রেজিস্ট্রেশনভুক্ত এবং সরকারি নিয়ম মেনে চলছে। মাঠের ভেতরে তাদের কারখানা গড়ে ওঠার কারণে জনজীবন এবং পরিবেশের জন্য তেমন ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে না। আমাদের সবার সর্বাত্মক সহযোগিতায় ছাই কারখানাটি মাগুরার ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হয়ে উঠবে।

এসআর/এএসএম